রায়গঞ্জ( সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ পৌরসভার প্রধান সড়ক দখল করে গড়ে উঠেছে সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড। প্রায় সবসময় এসব যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকায় এ সড়কজুড়ে লেগে থাকে যানজট। এতে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সড়কের একপাশ দখল করে রয়েছে সিএনজি, অপরপাশে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। ফলে পথচারী থেকে শুরু করে অন্যান্য যানবাহনের চালকরা প্রতিদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ—বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জানা থাকলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
অবৈধ পার্কিং উচ্ছেদের ঘোষণা থাকলেও রায়গঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষের তৎপরতা দৃশ্যমান নয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ধানগড়া গোলচত্বর এলাকায় প্রতিদিন ছোট-বড় সব যানবাহন থেকেই পৌর টোল আদায় করা হয়। টোলের পরিমাণ ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত থাকলেও এসব গাড়ি নির্ধারিত স্ট্যান্ডে না দাঁড়িয়ে রাস্তার ওপরই পার্কিং করে। ফলে সকাল-বিকেল এ এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট ও বিশৃঙ্খলা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব শেখ রিয়াদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, জন গুরুত্বপূর্ণ ধানগড়া গোলচত্বরে গাড়ি পার্কিং সমস্যা সমাধানে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ অবহেলার কারণে যানজট দিন দিন বাড়ছে।
রায়গঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক এলাকা হওয়ায় প্রতিদিন হাজারো মানুষ এখানে যাতায়াত করেন। পর্যাপ্ত পার্কিং সুবিধার অভাবে চালকরা রাস্তায় ও ফুটপাতে গাড়ি দাঁড় করাতে বাধ্য হন। এতে রাস্তা সরু হয়ে যানজট পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে ধানগড়া গোলচত্বর এলাকা সব সময়ই ব্যস্ত থাকে। এ অবস্থায় অবৈধ পার্কিং পরিস্থিতি আরও দুর্বিষহ করে তুলছে।
জেলা সদর ও উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের শতাধিক অটোরিকশাসহ নানা যানবাহন প্রতিদিন ধানগড়া পৌর গোলচত্বরে চলাচল করে। ঢাকা-বগুড়াগামী যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাকসহ পণ্যবাহী যানও এ সড়ক ব্যবহার করে। এর ফলে প্রতিদিন শতশত যানবাহন চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। অথচ, যত্রতত্র পার্কিং, যাত্রী ওঠানামা ও অপ্রশিক্ষিত চালকের এলোপাথাড়ি চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই সাধারণ যাত্রীদের।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. শিপন সরকার রানা বলেন, ‘প্রধান সড়কের দুই পাশে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় পথচারীদের হাঁটার জায়গাও থাকে না। প্রতিদিন যানজট ও কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। গোলচত্বরে প্রতিনিয়তই ভিড় লেগে থাকে। স্ট্যান্ড নির্দিষ্ট স্থানে তৈরি হলে এসব সমস্যা কমে যেত।’
অন্যদিকে, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা বলেন, ‘আমরা কোথায় যাব? এখানে দাঁড়ানোর মতো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশেই দাঁড়াতে হয়। না হলে যাত্রী পাওয়া যায় না। প্রশাসন যদি আমাদের নির্দিষ্ট কোনো জায়গা দেয়, তাহলে আমরা সেখানে চলে যাব।’
সচেতন মহল মনে করছে, ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ধানগড়া গোলচত্বরে যথোপযুক্ত পার্কিং এলাকা নির্ধারণ জরুরি। সেইসঙ্গে জনসচেতনতা বৃদ্ধি না করলে এ অব্যবস্থাপনা বন্ধ হবে না।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. খাদিজা খাতুন জানান, ‘জানমালের নিরাপত্তা এবং জনভোগান্তি লাঘবে পৌর ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খুব শিগগিরই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’