সোহেল রানা ,চৌহালী প্রতিনিধি:
যমুনা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার চরাঞ্চলের শত শত বিঘা বাদামের ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
রবিবার (৪মে) সকালে দিকে স্থল ইউনিয়নের সন্তোষা চরে সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেক কৃষক কোমর পানিতে নেমে অপরিপক্ক বাদাম তুলছেন। এই পরিস্থিতিতে বহু কৃষক পরিবার বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছে।
চৌহালী উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় চাষিরা জানান, যমুনা নদীর বিধ্বস্ত চরে নতুন করে জেগে ওঠা জমিতে এ বছরও অনেক কৃষক বাদাম চাষ করেছিলেন। স্থল ও খাসপুখুরিয়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুই হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়। কৃষকেরা কিছুদিনের মধ্যেই বাদাম ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে আকস্মিক জোয়ারে যমুনা নদীতে পানি বেড়ে যায়। চরের নিচু এলাকার বাদামের ক্ষেত তলিয়ে যায়। এতে প্রায় এক হাজার ৯০০ মণ বাদাম নষ্ট হয়েছে, যা দুই শতাধিক হেক্টর জমির ফসল। এই কারণে ওই এলাকার শতাধিক কৃষক চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
সন্তোষা চরের কৃষক আবুশামা, লোকমান হোসেন, ছানোয়ার হোসেন, মোসছেদ আলী ও জয়নাল হোসেন জানান, অন্যান্য বছর বাদামের ভালো ফলন হয়েছিল। তাই এবার বেশি জমিতে চাষ করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ পানি এসে তাদের অনেক জমির বাদাম নষ্ট করে দিয়েছে। কোমর পানিতে নেমে অপরিপক্ক বাদাম তুলতে হচ্ছে। তারা আগামীতে সঠিক সময়ে কৃষি প্রণোদনার বীজ বিতরণের দাবি জানান।
এদিকে, যমুনার পশ্চিম তীর এনায়েতপুরেও একই চিত্র দেখা গেছে। পানিতে জমি তলিয়ে যাওয়ায় কৃষক পরিবারের নারী, শিশুসহ সবাই মিলে বাদাম তুলছেন। কেউ কেউ শুকনা স্থানে রোদে শুকাচ্ছেন। এতে কয়েক লাভ টাকার ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সন্তোষা গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হাসান আলী বলেন, কৃষকদের স্বপ্ন পানিতে তলিয়ে গেছে। বাদামের ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় বহু কৃষক এ বছর লোকসানের মুখে পড়বে। তিনি সরকারিভাবে তাদের সহায়তার দাবি জানান।
চৌহালী উপজেলার স্থল ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু হুরাইয়া জানান, চরাঞ্চলের বাদাম ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অপরিপক্ক বাদাম তুলে অনেক কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সরকারি সহায়তা এলে তাদের দেওয়া হবে। এ ছাড়া বিশেষ প্রণোদনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে