1. thedailydrishyapat@gmail.com : TheDaily Drishyapat : TheDaily Drishyapat
  2. info@pratidinerdrishyapat.com : Pratidiner Drishyapat : Pratidiner Drishyapat
  3. admin@thedailydrishyapat.com : admin :
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় চালের দাম হঠাৎ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি; নাভিশ্বাস ক্রেতা-বিক্রেতার অভিযানের দাবি 

সংবাদ প্রকাশক:
  • Update Time : রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫
  • ৭ Time View
জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ: 
নওগাঁয় হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ভরা মৌসুমেও চালের এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষদের। তারা মুখ ফুটে কিছু বলতে না পারলে চোখে মুখে অস্বস্তির ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
দেশের ধান-চাল উৎপাদনকারী অন্যতম এ জেলা নওগাঁয় এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে প্রতি কেজি ২ থেকে ৭ টাকা। পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে প্রতি কেজি চালরে দাম বেড়েছে ২-৪ টাকা। আর পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়ায় প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। প্রতি কেজিতে প্রকারভেদে বেড়েছে ৫-৬ টাকা।
চালের হঠাৎ এভাবে দাম বাড়ার কারণ হিসেবে একেকজন একেক মন্তব্য করছেন। কেউ বলছেন মিলারদের সিন্ডিকেট, কেউ বলছেন ধানের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, আবার কেউ বলছেন সংশ্লিষ্টদের নিয়ন্ত্রণ নেই বাজারে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। আবার এই সময়ে চালের এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি ক্ষোদ এক খুচরা ব্যাবসায়ীই মেনে নিতে পারছে না।
ভরা মৌসুমে মিলারদের সিন্ডিকেট এবং মজুতবিরোধী অভিযান না থাকায় চালের এমন আকস্মিক দাম বৃদ্ধি হয়েছে বলে মনে করছেন খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ করেই চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষদের।
নওগাঁ শহরের আড়তদারপট্টির পাইকারি চাল বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ২-৪ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে জিরাশাইল ৬৮-৭০ টাকা, কাটারি ৭০-৭২, শুভলতা ৬০-৬২টাকা, ব্রি আর-২৮ চাল ৬২-৬৪ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫৫-৫৬ টাকা দরে বিক্রি করছেন মিল মালিক ও আড়তদাররা। এক সপ্তাহ আগে এই মোকামে জিরাশাইল ৬৪-৬৬ টাকা, কাটারি ৬৬-৬৮ টাকা,শুভলতা ৫৭-৫৮ টাকা, ব্রি আর-২৮ জাতের চাল ৫৯-৬০ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ চাল ৫৩-৫৪ টাকা করে বিক্রি হয়েছিল।
অপরদিকে নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চালবাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে মানভেদে কেজি প্রতি ৫-৮ টাকা বেড়ে জিরাশাইল ৭০-৭২ টাকা, কাটারি ৭৫-৮০ টাকা, শুভলতা ৬২-৬৪ টাকা, ব্রি আর-২৮ চাল ৬৫-৬৬ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এক সপ্তাহে আগে এই বাজারে প্রতি কেজি জিরাশাইল ৬৫-৬৬ টাকা, কাটারি ৭০-৭২ টাকা, শুভলতা ৫৭-৫৮ টাকা, ব্রি আর-২৮ চাল ৫৯-৬০ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫২-৫৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিলো। প্রকারভেদে ৩ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে চালের দাম।
এছাড়া ইন্ডিয়ান গুটি চাল ফ্রি সেলে ৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো আবার স্বর্ণা চালের সাথে মিশিয়ে একটু কম দামে বিক্রি করছে কেউ কেউ। অনিয়ম আর দুর্নীতি আমাদের রক্তের সাথে মিশে গেছে।
তবে আমাদের এখানে জিরাশাইল, কাটারি ও স্বর্ণা চাল টাই বেশি। অন্যান্য চাল তেমন আমদানি নেই। এছাড়া এখন বাজারে বিভিন্ন জাতের ধান পাওয়া যায়। যেগুলো সর্টারে দিয়ে মিক্সিং করে। কাজেই ভালো চাল পাওয়া মুশকিল। যেমন দিনাজপুরের কাটারি ভোগের আলাদা একটা সেন্ট আছে। আর এখন যে কাটারি পাওয়া যাচ্ছে সেটা একাধিক রকমের। এরমধ্যে আবার সর্টার, আনসর্টার, এক সিদ্ধ ও দুই সিদ্ধের চাল আছে। কাজেই বড় বড় ব্যবসায়ীদের কখনও লোকসান হবে না।
এমনটাই জানালেন পৌর ক্ষুদ্র চালবাজার সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন। তিনি মুঠোফোনে আক্ষেপ ও ক্ষোভ নিয়ে বলেন, বড় বড় বয়বসায়ীরা বেশি দাম দিয়ে ধান কিনছে। ছোট ব্যবসায়ীরা বড় বড় মিলারদের সাথে পেরে উঠতে পারছে না। এটা পুরো একটা সিন্ডিকেট। বাংলাদেশে যে ধান আছে, তা দিয়ে একবছর চলে যাব।
তিনি আরও বলেন, আর বড় বড় ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার টন ধান কিনে মজুদ করে রাখছে। আগে ৩ থেকে ৪ টা অটোগাড়িতে চাল নিতাম। এখন ২০ বস্তা চাল পাচ্ছি না। কারন আমাদের কাছে তো আর বড় বড় ব্যবসায়ীরা খুচরাভাবে চাল দিবেনা। তাই আমাদের আমদানি কমে গেছে, আর ক্রেতা কিনছে কম পরিমানে চাল। সরকারি নজরদারি না থাকার সুযোগে অতিরিক্ত মজুদ করছে তারা। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করার জোর দাবি জানালেন বাজারের খুচরা এই ব্যবসায়ী।
নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মেসার্স তাপস খাদ্য ভান্ডারের প্রোপাইটার তাপস কুমার মন্ডল বলেন, মিলাররা পর্যাপ্ত পরিমাণে চাল দিচ্ছে না। ২০ বস্তার চাহিদা দিলে চাল দেয় ৫-৭ বস্তা। তার উপর বস্তা প্রতি ২০০-৪০০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যার কারণে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চাল মানভেদে গেলো সপ্তাহের চেয়ে ৫-৬ টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ভরা মৌসুমে বাজারে এভাবে চালের দাম বেশি হওয়া স্বাভাবিক কোন ঘটনা না। মিলারদের সিন্ডিকেট এবং মজুতের কারনেই চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
চালের আকস্মিক দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে নওগাঁর আড়তদার পট্টির সততা রাইস এজেন্সির পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সুকুমার ব্রহ্ম বলেন, দেশে নির্বাচিত সরকার না থাকায় সরকারের মজুত নীতিমালার তোয়াক্কা করছেন না অসাধু মজুতদাররা। এবার বোরো মৌসুমের শুরুতেই করপোরেট ব্যবসায়ীরা হাট-বাজারে আসা অর্ধেকের বেশি ধান কিনে মজুত করে রেখেছেন। কৃষকের ধান সাধারণ মিলারদের হাতে একেবারে নেই বললেই চলে। যার প্রভাবে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে প্রতি কেজি চালের দাম পাইকারি পর্যায়ে ২-৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার মুঠোফোনে বলেন, চালের দাম সাধারণ ২-৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ৬-৭ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ব্র্যান্ডিং কোম্পানির। তবে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে কৃষকদের কাছ থেকে বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে। যার কারণে চালের াম বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও আমরা বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ চাই। এই জন্য আমাদেরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর দৃশ্যমানভাব যেসকল মিলে অতিরিক্ত মজুদ আছে সেখানে অভিযান চালনো উচিৎ। বাজারে স্বস্তি ফেরাতে চাইলে ধান-চালের অবৈধ মজুতদারদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল মুঠোফোনে বলেন, চালের দাম কি কারণে বেড়েছে এই জন্য খাদ্য কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছি। তারা যেন প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে যদি অপরাধ মনে হয়, তাহলে আমরা অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করবো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
প্রতিদিনের দৃশ্যপট ২০২৪
Theme Customized BY Kh Raad (FriliX Group)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com