1. thedailydrishyapat@gmail.com : TheDaily Drishyapat : TheDaily Drishyapat
  2. info@pratidinerdrishyapat.com : Pratidiner Drishyapat : Pratidiner Drishyapat
  3. admin@thedailydrishyapat.com : admin :
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ০৭:৫১ অপরাহ্ন

এক যুগের বেশি সময় ধরে নৌকায় ও ভাওড়ে বসবা সমুর

সংবাদ প্রকাশক:
  • Update Time : সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫
  • ১২ Time View

নাটোর প্রতিনিধি:

বাবা দিবসটি এলেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে নানান ধরনের আবেগময় পোষ্ট। প্রতিটি মানুষের জীবনে তাদের মা-বাবাই সবচেয়ে আপনজন। তাদের ভালোবাসায় বেড়ে ওঠে সন্তানরা।

বাবার সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব থাকে সন্তানদের। কিন্তু তাই বলে বাবার ভালোবাসা কম নয়। তিনি তার সারাটি জীবন ব্যয় করেন সন্তানদের পেছনে, পরিবারের পেছনে। সেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেই দেশে দেশে পালিত হয় বাবা দিবস।

বাবা শব্দটা অন্তরে আসলেই মনে পড়ে যায়,জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পী জেমর্স এর কন্ঠে গাওয়া গানটি-বাবা কতদিন কতদিন দেখিনি তোমায়,কেউ বলেনা মানিক কোথায় ও খোকা বুকে আয়।

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বাঁশভাগ গ্রামের ৬৫ বছরের বৃদ্ধ মোহাম্মদ সমজান সরদার আজ যেন সমাজের এক উপেক্ষিত প্রতিচ্ছবি। সমজানের পিতার নাম মৃত আব্দুল কাদির। বয়সের ভাড়ে নুয়ে পড়া এই মানুষটি এক সময়ের পরিশ্রমী একজন পিতা। নিজের শ্রম দিয়ে সন্তানদের বড় করেছেন,মানুষ করেছেন। অথচ সেই সন্তানরা আজ মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার এখন মৃত্যুর দিন ঘুনছেন তিনি।

এই অসহায় বাবা এক যুগের বেশি সময় ধরে নৌকায় ও ভাওড়ে বসবাস করছেন। তিনি ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তার সন্তানরা স্বাবলম্বী হলেও কেউ তাকে একটু খাবারও আশ্রয় দেয়না। তার সহধর্মিণী প্রায় ১৪ বছর আগেই এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তখন থেকে আরও একা হয়ে পড়েছেন সমজান সরদার।

অসহায় সমজান সরদার ওরফে সমুর কান্না শুনছে না কেউ ছেলেরা দেয় না ভাত-কাপড়,চোখে দেখতে পান না,তবু বেঁচে আছেন একটু আশ্রয়ের আশায়।

বয়সের ভাড়ে চোখে দেখতে পান না ঠিকমত।দৃষ্টিশক্তি প্রায় নেই বললেই চলে। ঝাপসা চোখে নদী কিংবা পুকুরে জাল ফেলেন,কোন মতে দু’বেলা ভাত জোটাতে মাছ ধরেন। প্রায় এক যুগের ও বেশি সময় ধরে নৌকা ও আমবাগানের এক কোণে ভাওরে জীবন কাটাচ্ছেন।

তার দুই ছেলে,যারা আজ নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত,তারা বাবার জন্য একমুঠো ভাত কিংবা পুরনো এক টুকরো কাপড়ও জোগাড় করে না। একমাত্র মেয়ে থাকলেও বাবার কষ্ট ঘোচানোর ক্ষমতা নেই তার। একজন পিতা যখন তার সন্তানদের কাছে অবহেলিত হয়,তখন তার হৃদয়ের কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

তবু সমজানের একটিই স্বপ্ন মাথা গোঁজার ঠাঁই হোক অন্তত মৃত্যুর আগের ক’টা দিন। এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটাও যেন তাঁর জন্য লড়াই। বৃষ্টি এলে আমবাগানের গাছের নিচে ভিজতে হয়,ঠান্ডা এলে কাঁপতে হয়,তবুও মুখে কিছু বলেন না,শুধু চেয়ে থাকেন একটুকু সাহায্যের আশায়।

স্থানীয় এলাকাবাসীরা সাকিবুল ইসলাম,আজিজুল ইসলাম,সাহিনুর রহমান নয়ন বলেন,প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে নৌকায় ও ভাওড়ে বসবাস সমজান সরদার ওরফে সমু। রোদ,বৃষ্টি সবকিছু তার উপর দিয়েই যায়। কিন্তু,তার সন্তানরা এক পলক ফিরেও দেখে না। সমাজের বিবেকবান মানুষ,স্থানীয় প্রশাসন একটা ছোট ঘর চান যেন মরার আগে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারে। একটু সহযোগিতাই হতে পারে একজন অসহায় পিতার জীবনের শেষ আশ্রয়।

অসহায় পিতা সমজান সরদার জানান,আমার সহধর্মিণীর মৃত্যুর পর থেকে আমার সন্তানরা আমাকে দেখে না। আমি এখন তাদের বোঝা,তারা নিজেরা নিজের মত আছে। আর আমি ডালে ডালে,রোদ,ঝড় বৃষ্টি সব আমার উপর দিয়ে যায়।

নলডাঙ্গা উপজেলা সমাজ সেবা কমর্কতা সুমন সরকার বলেন,সমজান সরদার আবেদন করলে,তাকে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
প্রতিদিনের দৃশ্যপট ২০২৪
Theme Customized BY Kh Raad (FriliX Group)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com