ঈশ্বরগঞ্জ(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে অরক্ষিত সেপটিক ট্যাংকে কানিজ ফাতেমা(৪)নামে এক শিশুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যার পর মামলার বাদীর পরিবারকে মিথ্যা মামলায় হায়রানির অভিযোগ উঠেছে।
আজ(১৩ সেপ্টেম্বর)শনিবার ভোক্তভোগী পরিবার জানায়, গত (৮ সেপ্টেম্বর) বিবাদী পক্ষের সাদিয়া আফরোজ নামে একজন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে ময়মনসিংহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে। নিহত শিশুর বাবা কামাল হোসেন বলেন,মেয়েকে হত্যার ঘটনাটিকে কাউন্টার দিতেই আমার চাচা ও ভাইদের নামে এই মিথ্যা মামলা।
নিহত শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে,গত (৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচর পূর্বপাড়া গ্রামের কাওসার মিয়া তারই নবনির্মিত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে শিশু কানিজ ফাতেমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে মৃত্যু হয় শিশু ফাতেমার। খবর পেয়ে ঈশ্বরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট সেপটিক ট্যাংক থেকে ফাতেমার মরদেহ উদ্ধার করে। শিশু ফাতেমা একই গ্রামের কামাল হোসেনের মেয়ে। কামালের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে ফাতেমা ছিল দ্বিতীয়। ঘটনারদিন রাতেই ফাতেমার বাবা কামাল হোসেন বাদী হয়ে কাওসারকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই কাওসার মিয়া পলাতক রয়েছেন এবং অজ্ঞাত জায়গা থেকে বাদী পরিবারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, প্রাণ নাশের হুমকি ও ভারাটে লোক দিয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
নিহত শিশুর মা শাহনাজ বেগম বলেন, ‘ঘটনারদিন আমার মেয়ে ফাতেমা যখন বাড়ির সামনে খেলছিল। সেসময় প্রতিবেশী কাওসারও ঘর নির্মাণের কাজ করছিল। এদিন দুপুরে মেয়েকে গোসল করাতে খোঁজাখুঁজি করছিলাম। খুঁজাখুঁজির একপর্যায়ে কাওসারের নির্মাণাধীন বাড়ির অরক্ষিত সেপটিক ট্যাংক থেকে মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ফাতেমাকে কাওসার সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়ে মারার পর সে পালিয়ে যায়। আমার মেয়ের হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই,যাতে এভাবে আর কোন মায়ের বুক খালি না হয়।
নিহত শিশুর বাবা কামাল হোসেন বলেন’নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক কাওসারকে অরক্ষিত সেপটিক ট্যাংকে পড়ে আমার মেয়ে মারা গেছে। আমাদের সন্দেহ কাওসারেই ফাতেমাকে মেরে ট্যাংকির ভিতরে ফেলে দিয়েছে। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি জানাচ্ছি।’
ফাতেমার দাদা মো. আব্দুল বারী(৬৩) বলেন,নাতিকে হত্যার পর চাঁদাবাজি ও বাড়িঘর ভাঙচুরের মিথ্যা মামলা দিয়ে মূল ঘটনা আড়াল করতে চাইছে কাওসার। আমরা হত্যাকান্ডসহ এই বানোয়াট ঘটনার বিচার দাবি করছি।
এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কাওসার ও তাদের পরিবারের মোবাইল নাম্বার একাধিকবার ফোনে করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ঘটনারদিন রাতেই নিহত শিশু ফাতেমার বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে থানায় একটি মামলাটি রুজু করা হয়। ঘটনার পর থেকেই আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।