রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামে এক কষ্টসাধ্য জীবনের গল্প বয়ে চলেছে হতদরিদ্র দম্পতি তোজাম্মেল হক (৫০) ও তার স্ত্রী জহুরা বেগমের। চার বছর আগে একটি ব্রেইন স্ট্রোকের কারণে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হন তোজাম্মেল। বর্তমানে তিনি চলাফেরা তো করতেই পারেন না, এমনকি নিজের ন্যূনতম কাজগুলোতেও অন্যের সহায়তা লাগে। এই অবস্থায় একমাত্র ভরসা তার স্ত্রী, জহুরা বেগম।
তাদের বসবাস একটি টিনশেড ছাপড়া ঘরে, যেখানে বর্ষাকালে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে, শীতে ঠাণ্ডায় কষ্ট হয় আর গ্রীষ্মে অতিরিক্ত গরমে থাকা যায় না। পরিবারের আয়ের কোনো নির্ভরযোগ্য উৎস নেই। তাদের ১৩ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে একটি করাত কলে দৈনিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করে, দিনে ২০০ টাকার মতো আয় করে। এই সামান্য আয়েই কোনোরকমে চলে পরিবারের খরচ, ওষুধ, খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
জহুরা বেগম বলেন, “চার বছর ধরে আমি স্বামীর সেবা করছি। কোনো কাজ করতে পারি না, কারণ ওকে একা রেখে কোথাও যেতে পারি না। ছেলেটা ছোট, ওর পক্ষে সংসার চালানো কষ্টকর। এখনো সরকার থেকে কোনো সাহায্য পাইনি।”
গ্রামের কিছু সহানুভূতিশীল মানুষ তাদের জন্য হুইল চেয়ার, খাদ্য সহায়তা ও একটি পাকা ঘরের দাবি তুলেছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন।
রায়গঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হাসান বলেন, “তোজাম্মেল হকের প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। এছাড়া, উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তার পরিবারের জন্য সরকারি সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয়দের আশা, সরকার ও সমাজের সহানুভূতিশীল ব্যক্তিরা যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে এই পরিবারটিকে অন্তত মানবেতর জীবন থেকে কিছুটা স্বস্তি দেওয়া সম্ভব হবে।