নওগাঁ প্রতিনিধি:
গত সোমবারা (৫ আগষ্ট) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর দেশব্যাপী শুরু হয় এক অস্থির পরিবেশের। স্ব স্ব জায়গার দায়িত্ব পালনের কর্তব্য থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে রাখেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে চলাচলের রাস্তা পরিস্কার ও জানজট নিরসনে চালকদের নিয়ম মাফিক চলার জন্য দায়িত্ব তুলে নেয় সারাদেশের শিক্ষার্থী। গত ৬ আগষ্ট থেকে শুরু হয় তাদের দায়িত্ব পালনের এই যাত্রা।
সারাদেশের ন্যায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন শুরু করেন নওগাঁর সাধারণ শিক্ষার্থী ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। তৃতীয় দিনের মতো আজও তারা দায়িত্ব পালন করছেন। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে যানজট নিরসনের নিরবিচ্ছিন্নভাবে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। আর দায়িত্ব পালন দেখে খুশি সাধারণ মানুষসহ সচেতন মহলরা।
বৃহষ্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুর ১২টায় সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের মুক্তির মোড়, দয়ালের মোড়, রুবির মোড়, কাজির মোড়, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, গোস্তহাটির মোড়, ব্রিজ মোড় ও তাজের মোড় এলাকাগুলোতে অবস্থান নিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় কারও হাতে লাঠি, কারও মুখে বাঁশি। ট্রাফিক পুলিশের মতো ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন তাঁরা। নিয়ম মেনে চলতে মানুষ ও গাড়িচালকদের বাধ্য করছেন। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তারা মানুষকে নিয়ম-শৃঙ্খলা শেখাচ্ছেন ও চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন। কৌতুহল করে অনেকে বলছেন দায়িত্ব পালন কিভাবে করতে হয় এবং নিয়ম কিভাবে শেখাতে হয়, সেটা কোমলমতি এই শিক্ষার্থীরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
এসময় লামিয়া নামে স্কুল শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন- যেহেতু কিছুদিন আগে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। রাস্তায় কোন ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি আমরা শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠনগুলো রাস্তায় নেমেছি যানজট নিরসনে। যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে। মানুষের কষ্ট না হয়। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।
আরেক শিক্ষার্থী সুরাইয়া বলেন- আমাদের দেশের কিছু কিছু মানুষ এখনো সংস্কার হতে পারেনি। সবাই মিলে আমরা সুষ্ঠু সুন্দও দেশ গড়তে চাই। এজন্য আমাদের দেশ রক্ষায় সবাই সবার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
নওগাঁ সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম শামীম বলেন, আমরা গতকাল দুই শিফটে সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা এবং বিকেল সাড়ে ৫ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত স্বেচ্ছায় রাস্তায় জানজট নিরসনে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছি।
এদিকে রাস্তায় পুলিশ প্রশাসনকে দেখা যায়নি। তবে সতর্কতা অবস্থায় দেখা গিয়েছে সেনাবাহিনীকে।