শরিফুল আলম, ঈশ্বরগঞ্জ,(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ৬৫ নং আঠারবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমেশ সরকার বাবুলের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় অভিভাবক ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না করে প্রধান শিক্ষক নিজের ইচ্ছামাফিক তা ব্যয় করছেন। তার বিরুদ্ধে পুরাতন বই, খাতা ও স্লীপ বিক্রির অর্থ আত্মসাত, ওয়াস ব্লক মেরামতের বরাদ্দের টাকা কাজে না লাগানো এবং মেরামতের টাকা যথেচ্ছ ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ অর্থবছরে (২০১৯-২০ থেকে ২০২৪-২৫) বিদ্যালয়টি স্লীপ, রুটিন খরচ, প্রাক-প্রাথমিক, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মেরামত বাবদ প্রায় ৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দগুলো হলো:
২০১৯-২০: স্লীপ খরচ ৬০ হাজার, মেরামত ১.৫০ লাখ টাকা।
২০২০-২১: স্লীপ ৮৫ হাজার, রুটিন খরচ ৪০ হাজার।
২০২১-২২: স্লীপ ৭০ হাজার, প্রাক-প্রাথমিক ও দূর্যোগ বাবদ ২৫ হাজার।
২০২২-২৩: স্লীপ ৭০ হাজার।
২০২৩-২৪: স্লীপ ৭০ হাজার, মেরামত ২ লাখ টাকা।
২০২৪-২৫: স্লীপ ৭০ হাজার।
অভিযোগ রয়েছে, এসব বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যয়ের কোনও স্বচ্ছতা নেই। প্রধান শিক্ষক সরকারি উপস্থিতি নিশ্চিত না করে নানা অজুহাতে বিদ্যালয়ের বাইরে সময় কাটান। শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে তাকে আগে ১৪টি কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিভাবক জানান, “আঠারবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবেশ এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে, যেখানে শিক্ষা কার্যক্রম কার্যত ধ্বংসের মুখে। উপজেলার অন্য বিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনা করলে বাস্তবতা স্পষ্ট বোঝা যায়।”
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সুমেশ সরকার বাবুল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ওয়াস ব্লক মেরামত করা হয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজনের কারণে এমন অভিযোগ আসছে।”
এদিকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমেদ বলেন, “আমি বিষয়টি এখন জানলাম। দ্রুত সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”