সাব্বির মির্জা, (তাড়াশ) প্রতিনিধিঃ
কৌশলে বাবার সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে নিয়েছেন দুই ছেলে।
শুধু তাই নয়, পেটের তাগিদে অসহায় বৃদ্ধ দম্পতিকে অন্যর বাড়িতে কাজ করতে হয়েছে । এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে ছাড়তে হয়েছে সেই বাড়ি। পুকুরে পারে শাড়ি আর টিন দিয়ে তৈরি ছোট্ট একটি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
মঙ্গলবার (১ জুলাই ) রাত ৯ টার দিকে সরেজমিনে বৃদ্ধ সানোয়ার হোসেন মন্ডল (৬৭) ও মতি জাহান (৪৮) কষ্টময় জীবনযাপনের এ দৃশ্য চোখে পড়ে।
তারা সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়ন কুসুম্বি এলাকার বাসিন্দা।
সম্পত্তি লিখে নিয়ে বড় ছেলে মোক্তার আলী মন্ডল ও ছোট ছেলে মানিক মন্ডল বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বৃদ্ধ মা বাবা বলেন, দুই ছেলে নিয়েই ছিল আমাদের সংসার। আমার স্বামী সহজ-সরল। সেই সরলতার সুযোগ নিয়ে কৌশলে শেষ সম্বলের জমি জমা দুই ছেলে মোক্তার মন্ডল ও মানিক মন্ডল তাদের নামে লিখে নিয়েছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, সম্পত্তি লিখে নেওয়ার পর যখন ছেলেদের সঙ্গেই তাদের ঘরে থাকতে হয়েছে। সে-সময় প্রায়ই না খেয়েও থেকেছি। পেটের তাগিদে রাস্তায় রাস্তায় কাজ করেছি। এইসব কষ্ট সহ্য করতে না পেরেই বাড়ি ছেড়ে এখন বাড়ির পশ্চিম পাশে টিনের তৈরি ছোট্ট একটি ঘরে বসবাস করছি।
কীভাবে সম্পত্তি লিখে নিল ছেলেরা, প্রশ্নে ভুক্তভোগী সানোয়ার হোসেন মন্ডল জানান, দুই ছেলে তার টিপসই চাইলে তিনি তা দিয়ে দেন। এরপর দুই ছেলে মিলে যা শিখিয়েছে তাই বলেছেন। এভাবেই যে সম্পত্তি তারা নিজেদের নামে লিখে নিয়েছে তিনি বুঝতেই পারেননি।
অভিযুক্ত বড় ছেলে মোক্তার আলী মন্ডলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। বলেন,বাবা-মায়ের সব অভিযোগই মিথ্যা। বাবা নিজের ইচ্ছায় আমাদের নামে জায়গা লিখে দিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো রাজিব সরকার রাজু জানান, দুই ছেলে মিলে তাদের বাবার সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে নেওয়ার ঘটনাটি সত্যি। আমি দুই ছেলেকে অনেকবার বলেছি। কিন্তু তারা কিছুই শুনেনি। তার দুই ছেলে খুবই খারাপ।
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো জিয়াউর রহমান জানান, এই ঘটনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমার জানা নেই। কেউ কোনো অভিযোগও দায়ের করেনি। তবে আমি খোঁজে নিচ্ছি। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।