ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ):প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে নৌবাহিনীতে কর্মরত এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মোঃ নাজমুল হুদা উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের গোল্লাজয়পুর গ্রামের নুরুল হক-এর ছেলে।
ভুক্তভোগী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “অভিযুক্ত মোঃ নাজমুল হুদা বর্তমানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) হিসেবে কর্মরত। সে আমার ছেলে মফিদুল ইসলাম রাব্বি-কে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নাবিক ও এমওডিসি (নৌ) পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৩,০০,০০০ (তিন লক্ষ) টাকা নেয়। ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) টাকা ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে তার ব্যক্তিগত একাউন্টে এবং বাকি ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা নগদ ক্যাশে দেওয়া হয়। টাকা নেওয়ার পর সে চাকরি না দিয়ে নানা টালবাহানা শুরু করে। আমি আমার টাকা ফেরত চাইলে কয়েকবার সে টাকা পরিশোধ করার তারিখ দিয়ে দিয়ে আমাকে ঘুরাতে থাকে। এক পর্যায়ে সে টাকা ফেরত দিবে না বলে জানায় এবং তার ক্ষমতার জোরে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া শুরু করে। পরে জানতে পারি, সে শুধু আমার সাথেই নয়, তার নিজ এলাকার বেশ কয়েকজনের সাথে এমনকি আত্মীয় স্বজনদের সাথেও একইভাবে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। আমি সহজ সরল মানুষ। তার চালাকি বুঝতে না পেরে আমি ঋণ করে তাকে টাকা দিয়েছি। নাজমুলের প্রতারণায় এখন আমি নিঃস্ব।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযুক্ত নাজমুলের এক খালা জানান, অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত দুইজনই তার নিকটাত্মীয়। চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাজমুলের টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে সে। পরে বাধ্য হয়ে নাজমুলের বাবা-মা জমি বিক্রি করে পাওনাদারদেরকে টাকা পরিশোধ করেছেন। এমনকি রাজু নামক নাজমুলের আরেক খালাতো ভাইয়ের স্বাভাবিক নিয়মে পুলিশে চাকরি হওয়া স্বত্বেও নাজমুলের সুপারিশে চাকরি হয়েছে বলে টাকা দাবী করে সে। আবার একই কাজ করায় পরিবারের সদস্যরা নাজমুলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন বলেও জানান তিনি।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে অভিযুক্ত নাজমুল বলেন, “অভিযোগকারী সম্পর্কে আমার মামা হয়। তার ছেলের চাকরির জন্য আমি ২,৫০,০০০ (দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা নিয়ে অন্য একজনকে দিয়েছিলাম। সেই ব্যক্তি টাকাটা দিব-দিচ্ছি বলে আমাকে ঘুরাচ্ছে, তাই আমিও মামাকে টাকাটা ফেরত দিতে পারতেছি না। কয়েকদিন আগে মামাকে কথা দিয়েছি, ঈদের মধ্যে যেভাবেই হোক ১ লক্ষ টাকা পরিশোধ করবো। বাকী টাকাটাও আস্তে আস্তে দিয়ে দিবো।”
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) ওবায়দুর রহমান বলেন, “এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”