নিজস্ব প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে রোজিনা খাতুন (২৫) নামে গৃহবধুকে গলাকেটে হত্যার পর তার স্বামী মোতালেব হোসেন (৩২) নিজের গলাকেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে উপজেলার নলকা ইউনিয়নের এরান্দহ গ্রাম থেকে নিহত গৃহবধু মোছা. রোজিনা খাতুনের (২৫) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোজিনা ওই গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ে। তার স্বামী মোতালেব হোসেন একই উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রামের বাসিন্দা। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন মোতালেব।
নিহত রোজিনার চাচাতো ভাই জাহিদ হাসান বলেন, প্রায় আড়াই বছর আগে মোতালেবের সঙ্গে রোজিনার বিয়ে হয়। এ বিয়ে মোতালেবের পরিবার মেনে না নেওয়ায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তাদের সংসারে ৮ মাস বয়সী একটি সন্তানও রয়েছে। মোতালেব ফেনী জেলায় রাজমিস্ত্রির কাজ শেষে সপ্তাহখানেক আগে বাড়ি ফেরেন। বাড়ি ফেরার পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল।
বুধবার (১১ জুন) রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ভোররাত রাত আড়াইটার দিকে পাশে ঘর থেকে বায়েজীদ নামে রোজিনার এক ভাতিজা কান্নার শব্দ পেয়ে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে তার ফুপুর রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে। পাশেই কাতরাচ্ছেন মোতালেব। ৮ মাস বয়সী শিশুটিও কান্নাকাটি করছে। এসব দেখে বায়েজীদ চিৎকার করে। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে ঘরের দরজা খুলে রোজিনার গলাকাটা মরদে দেখে থানায় খবর দেয় এবং আহত মোতালেব হোসেনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রোজিনার বাবা আব্দুল আজিজ অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর থেকে মেয়ে ও জামাই আমাদের বাড়িতেই থাকতো। জামাই মোতালেব রোজিনার উপর বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। মঙ্গলবার (১১ জুন) গভীর রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়। এরপরই এই ঘটনা ঘটে।
সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে রোজিনার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তার স্বামী আহত মোতালেবকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পারিবারিক কলহের জের ধরেই এমন ঘটনা ঘটতে পারে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।