
মাহাবুল ইসলাম, মেহেরপুর:
অন্যান্য ফল অপেক্ষা লাভজনক হওয়ায় মেহেরপুরে বৃদ্ধি পেয়েছে লিচু চাষ। বিগত বছরগুলোতে লাভের মুখ দেখলেও এবারে মাথায় হাত লিচু চাষি ও ব্যবসায়ীদের।
শুরুতেই মুকুলের পরিবর্তে গাছে গাছে দেখা মেলে কচি পাতা। তবে মগডালে কিছু মুকুলের দেখা পাওয়া গেছে।
বাগান মালিকদের ভাষ্য মতে ১০/২০ শতাংশ গাছে লিচু এসেছে। বাকি গাছে শুধু পাতা আর পাতা।
অন্যান্য বছরগুলোতে আশানুরূপ মুকুল ধরায় যত্নেরও অন্ত থাকে না। তবে এবারে অযত্ন অবহেলায় মুকুল থেকে ফলে রূপান্তরিত হয়৷ আগামী ১০/১৫ দিন পর আটি লিচু হারভেস্টিং শুরু হবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। চলছে বাদুড় ও অন্যান্য পাখির উপদ্রব থেকে লিচু বাঁচাতে নানা পন্থা অবলম্বন।
গত কয়েকদিনে মেহেরপুরের গোভীপুর, খোকসা, আমঝুপি, দরবেশপুর, বাঁশবাড়িয়া, চিৎলা, বাগোয়ান, রামনগর, বল্লভপুর, মহাজনপুর, গৌরীনগর, শিবপুর, আযান, শ্যামপুর, গোপালপুর, নওপাড়া, মাইলমারী, কালিগাংনী, সাহারবাটী, হিন্দা ও বামুন্দীসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে মেলে।
আযান গ্রামে ৬ বিঘা লিচু বাগান কিনেছেন এমন একজনের সাথে কথা বলে তিনি জানান, এবার ৭০টি গাছের লিচু কিনেছি কিন্তু কয়েকটি গাছে লিচু আসলেও অধিকাংশ গাছে নেই লিচু।
অপর একজন ব্যবসায়ী জানান, প্রতিটা লিচু গাছে ২৫ থেকে ৩০ পোণ লিচু ধরে থাকে কিন্তু এ বছরে আশানুরূপ লিচু ধরেনি। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে যেটুকুই হয়েছে মোটামুটি লাভবান হবেন বলে তিনি আশা করছেন।
খোকসা গ্রামে ৪৬ টি লিচু গাছের লিচু কিনেছেন এমন একজন ব্যবসায়ী জানান, ১ সপ্তাহ পর হারভেস্ট শুরু করবেন। লিচু কম ধরেছে বিধায় কম বাগান কিনেছেন। পাখি ও মানুষ হতে লিচু রক্ষা করতে নিয়মিত পাহারার ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
রামনগর গ্রামের একটি বাগানে শিবপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ী জানান, ৯০ বিঘা জমির আম ও লিচু বাগানের সবটুকু কিনেছেন। আশানুরূপ লিচু আসেনি। কিছু গাছের মগডালে অল্প কিছু লিচু নজরে পড়ছে। ইতিমধ্যেই পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচাতে কীটনাশক ব্যবহার করেছেন। তবে রোদে কিছু লিচুর রং ঝলসে গেছে।
বাগোয়ান গ্রামের অপর এক চাষি জানান, তিনার ৩ টি লিচুর বাগান রয়েছে। যেখানে ৬০ টি গাছ থাকলেও মাত্র ৪টি গাছে লিচু এসেছে। অন্যবারে লাভ হলেও এবারে লোকসান গুনতে হবে বলে জানান তিনি।
আগামী ১ সপ্তাহ পর আঠি এবং ২ সপ্তাহ পর বুৃম্বাই লিচু নামানোর কথা ব্যবসায়ীরা জানালেও ইতিমধ্যেই বিভিন্ন হাট-বাজারে অপরিপক্ক লিচুর বেচা-কেনা চলছে। প্রতি ৮০ পিস লিচু বিক্রি করছেন ১০০ থেকে ১’শ ৫০ টাকা দরে। এসব লিচু শিশুদের আবদারে অভিভাবকগণ কিনে তা শিশুদের খাওয়াচ্ছেন। যা শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রায় ৭’শ ৫০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে।