রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর:
তিস্তা নদীর ন্যায্য পানির হিস্যা আদায়, ভাঙন থেকে তীরবর্তী জনপদ ও কৃষিজমি রক্ষা এবং বহুল আলোচিত তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা—কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও রংপুরে একযোগে নদীর তীরে মশাল প্রজ্জ্বলন করে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলায় নদীর তীরে হাজারো মানুষ হাতে জ্বলন্ত মশাল নিয়ে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠেন। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নদীতীরে প্রতিধ্বনিত হয় তিস্তা রক্ষার আহ্বান। মশালের আলো নদীর জলে প্রতিবিম্বিত হয়ে যেন তীরবর্তী মানুষের বাঁচার আকুতি ছড়িয়ে দেয় চারপাশে।
রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের বুড়িরহাট বাজার এলাকায় তিস্তা তীরে অনুষ্ঠিত প্রধান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’র কুড়িগ্রাম জেলা প্রধান সমন্বয়ক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা। উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান হাসিবসহ স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় কৃষক মজিবর বলেন, “সারা বছর তিস্তায় পানি থাকে না। আবার হঠাৎ করে পানি এসে ঘরবাড়ি, জমি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তিস্তা আমাদের নিঃস্ব করছে। সরকার যদি নদীটাকে না বাঁচায়, আমরা টিকতে পারব না।”
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ জানান, রংপুর বিভাগের ১১টি স্থানে একযোগে এই মশাল মিছিলের কর্মসূচি পালিত হয়েছে। তিনি বলেন, “তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। সরকার অবিলম্বে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে তিস্তার নাব্যতা ফিরিয়ে আনুক, তীরবর্তী মানুষের জীবন ও কৃষি রক্ষা করুক। নদী বাঁচলে মানুষ বাঁচবে, কৃষি বাঁচবে, প্রকৃতি বাঁচবে।”
তিস্তার আলো ও অন্ধকারের এই লড়াইয়ে হাজারো মশালের ঝলকানি যেন তীরবর্তী মানুষের বেঁচে থাকার শেষ আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে।