মো: সাজ্জাদ হোসেন,সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের পুরুরা গ্রাম। উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১কিলোমিটার পূর্বদিকে ভাওয়াল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে গ্রামটি অবস্থিত।
এই গ্রামের শতভাগ মানুষ কৃষি নির্ভর। গ্রামবাসির উৎপাদিত শস্য, পাট, পেঁয়াজ, ফলমূল স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়। এমন সম্ভাবনাময়ী একটি গ্রাম ভূগছে জনদুর্ভোগে। এখনো লাগেনি উন্নয়নের ছোয়া।
গত ১৫ বছরে এই ইউনিয়নে কোটি টাকার উন্নয়ন করলেও এই গ্রাম ও এর আশেপাশের এলাকায় কোন ধরনের উন্নয়ন হয়নি। এক সময় গ্রামে কোনো রাস্তা ছিলো না। ১৯৯৭ সালে গ্রামের মাঝখান দিয়ে একটি কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করা হয়। বৃষ্টি নামলেই তাতে জমে থাকে পানি। দেখে বোঝার উপায় নেই এটা রাস্তা নাকি জলাশয়।
স্থানীয়রা জানান,সর্বশেষ ২০১৪ সালে এই রাস্তাটি ইটসলিং করা হয়েছিল।দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ইট সোলিং অবস্থায় রাস্তাটি পড়ে আছে। এখনো পাকা করা হয়নি ।
একই গ্রামের সামান্য বৃষ্টিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায় গ্রামের হিন্দু পাড়ার তিন কিলোমিটার এর কাঁচা সড়কটি। গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না জরুরি সেবার কোনো গাড়ি। এমনকি শ্মশান বা গোরস্থানে যেতেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীর। কাঁদা মাড়িয়েই প্রাইমারি স্কুল-কলেজে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের।
পুরুরা গ্রামের সুকুমার মন্ডল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হলেও আমাদের এলাকার উন্নয়ন হয়নি। আমাদের এলাকা অবহেলিত থেকে গেছে। সরকার দেশে অনেক উন্নয়ন করলেও এ রাস্তাটি পাকা করণের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।’
অটোচালক বোরহানউদ্দিন বাড়ি পুরুরা সাধুর পাড়া। অটো চালিয়েই চলে তার সংসার। রাস্তা নিয়ে তার অভিযোগ, উপজেলার কত রাস্তা ঠিক হচ্ছে, কিন্তু আমাদের রাস্তা হচ্ছে না। মাঝে মধ্যে মনে হয় আমরা এ দেশের জনগণ না। তিনি আরও বলেন, ভাঙা রাস্তার কারণে অটো বেশিরভাগ সময়ই টেনে নিতে হয়।
ষাটোর্ধ্ব সোহরাব মোল্যা বলেন, রাস্তার এমন অবস্থার কারণে আমাদের যাতায়াত ব্যাবস্থা যেমন ব্যাহত হচ্ছে। তেমনি শির্ক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাতে যেতে পারছেনা।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার অনেকাংশে ইট উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।পাশেই বিপজ্জকভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ইটের টুকরো।এর মধ্যে চলাচল করছে ছোট বড় যানবাহন। তাই পিছু ছাড়ছে না ছোট-বড় দূর্ঘটনা।এ অবস্থায় রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
রাস্তাটি উন্নয়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বেশ কয়েকবার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো পর্যন্ত রাস্তাটি পাকা করা হয়নি ভোট আসে, ভোট যায়, নেতারা আসেন আশ্বাস দেন তবে ভোট মিটতেই উধাও হন তাঁরা বলে জানিয়েছে গ্রামবাসী। রাস্তাটি পাকা করলে গ্রামবাসীসহ আশেপাশের প্রায় ১ হাজার পরিবারের ৩ হাজার লোকজন উপকৃত হবে।