অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে ফেলায় সহযোগীদের সাথে নিয়ে প্রতিবন্ধী ছোট ভাই শামীম ইসলামকে এসডে ঝলসিয়ে হত্যা করলেন বোন রেশমা খাতুন।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের আলোচিত প্রতিবন্ধী শামীম হত্যার আড়াই মাস পর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঘটনার সাথে জড়িত বোনসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন ভিকটিম শামীমের বড় বোন রেশমা খাতুন (২৫), পাশের বাড়ির ভাবি হাফিজা খাতুন (৪২), এসিআই ফুড কারখানার নিরাপত্তাকর্মী গোলাম মোস্তফা (৫৫), সুমন চন্দ্র ভৌমিক (২৮), তপু সরকার (১৯) ও শফিকুল ইসলাম (৪০)।
এর আগে গত ৪ জুলাই কামারখন্দ উপজেলার কুটিরচর এলাকায় এসিআই ফুড মিলের ডোবা থেকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শামীমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শামীমের বোন রেশমা খাতুন এসিআই ফুড কারখানায় চাকরি করতেন। একই কারখানায় সুমন, তপু ও শফিকুল নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি করতেন। রেশমা কারখানার বিভিন্ন কর্মচাররি ও স্থানীয়দের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন।
একদিন রাতে ভিকটিম শামীম তার বোনকে পাশের একটি কক্ষে অনৈতিক কর্মকাণ্ড করা অবস্থা দেখে ফেলে। এর পর থেকেই শামীমের বোন রেশমা তার সহযোগীদের সাথে নিয়ে ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে।
এ অবস্থায় ঘটনার দিন রাতে ভিকটিম শামীম এসিআই ফুড কারখানার ভেতরে ঢুকলে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরাসহ অজ্ঞাত আরও পাঁচ-ছয়জনের সহযোগিতায় তাকে প্রতিবেশী হাবিজা খাতুনের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে শামীমের বোন রেশমাকে খবর দিলে তিনি এসিড ও মাস্ক পরিহিত আরও দুজনকে সঙ্গে নিয়ে যায়। এরপর অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা এবং সুমন চন্দ্র ভৌমিক শামীমের দুই হাত ধরে রাখে এবং শফিকুল ইসলাম ছুরি দিয়ে শামীমের বুকে আঘাত করে। শেষ পর্যায়ে রেশমা শামীমের ওপর অ্যাসিড ঢেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর তারা লাশ কারখানার পাশের ডোবায় ফেলে দেয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরামুল হোসাইন বলেন, আসামিদের মধ্যে রেশমা, হাফিজা, গোলাম মোস্তফা ও সুমন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, কামারখন্দ উপজেলার কুটিরচর গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে শামীম ইসলামকে ২ জুলাই বিকেলে গোসলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। দুই দিন পর ৪ জুলাই সকাল ১০টার দিকে কুটিরচর এলাকার এসিআই ফুড কারখানার ডোবায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কামারখন্দ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।