দৃশ্যপট ডেস্ক:
মানবসভ্যতার ইতিহাসে এমন কিছু ব্যক্তিত্ব রয়েছেন, যাদের আগমন ও কর্মধারা শুধু একটি জাতি বা সম্প্রদায়ের জন্য নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় হয়ে আছে। তেমনই এক অনন্য মহাপুরুষ হলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। পবিত্র ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি—ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনেই তিনি জন্মগ্রহণ ও ইন্তেকাল করেছিলেন। এই দিন তাই শুধু মুসলিম উম্মাহর নয়, বরং শান্তি, ন্যায় ও মানবকল্যাণে বিশ্বাসী সকল মানুষের কাছে গভীর তাৎপর্য বহন করে।
মহানবী (সা.) ছিলেন সত্য, ন্যায়, সহনশীলতা ও মহানুভবতার জীবন্ত প্রতীক। তিনি দেখিয়েছিলেন, প্রকৃত মানবতা প্রতিষ্ঠার মূল শর্ত হলো সমতা ও ন্যায়বিচার। তার শিক্ষা স্পষ্ট করে দেয় বিচারকার্যে সামাজিক মর্যাদা, ধনসম্পদ কিংবা ক্ষমতার প্রভাব কোনো গুরুত্ব বহন করে না। ধনী-গরিব, শক্তিশালী-দুর্বল নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান অধিকার ও সমান ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই মানবতার প্রকৃত পথ।
বাংলাদেশ একটি বহুধর্ম, বহুভাষা ও বহুসাংস্কৃতিক সমাজ। আমাদের জাতীয় জীবনে তাই মহানবী (সা.) এর শিক্ষা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মদিনার সনদ প্রণয়নের মাধ্যমে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এমন এক সামাজিক ব্যবস্থা, যেখানে ভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে ছিল। সেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সৌহার্দ্যের শিক্ষা আজও আমাদের সমাজের জন্য এক অবিনাশী দিশারি।
মহানবী (সা.) এর জীবনাদর্শ কেবল ধর্মীয় সীমারেখায় আবদ্ধ নয়। তিনি ছিলেন মানবমুক্তির দিশারি, ন্যায়বিচারের আদর্শ ও সম্প্রীতির পথপ্রদর্শক। তার শিক্ষা বিশ্ববাসীকে অনুপ্রাণিত করে অন্যায়, বৈষম্য ও বিদ্বেষ থেকে দূরে থাকতে এবং শান্তি, ন্যায় ও মানবিকতার উপর ভিত্তি করে সমাজ গড়ে তুলতে।
অতএব, এ পবিত্র দিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক মহানবী (সা.) এর শিক্ষা ও আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে আমরা যেন ন্যায়নিষ্ঠ, শান্তিপূর্ণ ও সম্প্রীতিময় সমাজ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করি। তার জীবনাদর্শই হোক আমাদের আলোকবর্তিকা।
রিয়াজুল হক সাগর
কবি ও সাংবাদিক। রংপুর।