নাটোর প্রতিনিধি:

আমরা বিএনপি পরিবার সংগঠনের উপদেষ্টা মো. আবুল কাশেমের সমর্থক নাটোর জেলা জাতীয়তাবাদী সাইবার দলের সাধারণ সম্পাদক গুলমেরাজ হ্যামলেটের সাটানো ব্যানার, ফেস্টুন ছিড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। শহরের বিভিন্ন সড়ক, মোড় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাটানো এসব ব্যানার, ফেস্টুন ভাংচুরসহ অপসারণ করে নিয়ে গেছে তারা। এনিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগষ্ট) দিনগত রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক পোল ও গাছের সাথে সাটানো এসব বেনার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলাসহ অপসারণ করা হয়। এনিয়ে শহরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা এবং নিন্দার ঝড়। এছাড়া এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সরব হয়ে ওঠেছে। এসব ব্যানারে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ জেলা বিএনপির সদস্য এবং আমরা বিএনপি পরিবার সংগঠনের উপদেষ্টা মোঃ আবুল কাশেমের ছবি ছিল।

নাটোর জেলা জাতীয়তাবাদী সাইবার দলের সাধারণ সম্পাদক গুলমেরাজ হ্যামলেট অভিযোগ করে বলেন, আগামি ১ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিক। এ উপলক্ষে তিনি শুভেচ্ছা জানিয়ে নাটোর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন টানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে সেগুলো ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং সবগুলো দৃশ্যমান বেনারগুলো অপসারণ করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। কোথাও কোথাও ব্যানারগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, যাদের মধ্যে দলীয় আদর্শ নেই, তারাই প্রতিহিংসার রাজনীতি করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।

এ ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের একাধিক নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং ন্যাক্কারজনক। তাদের দাবি, যারা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি আনুগত্যবোধ রাখেন না, তারাই এই ধরণের অপকর্মের পেছনে জড়িত। এব্যাপারে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।

নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। দলের যে কোন নেতা-কর্মী তাদের পছন্দের প্রার্থী বা ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করতে পারেন, সেটা তার অপরাধের কিছু নয়। কারা ব্যানার বানিয়েছে আর কারা ভেঙ্গেছে তা তার জানা নেই। তবে যারাই এসব ভেঙ্গেছে বা অপসারন করেছে, তারা অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। কারন ওই ব্যানার-ফেষ্টুনে অবশ্যই জাতীয় নেতার ছবি ছিল এবং এ ঘটনার জন্য দলের ভাবমুর্তি অনেকটাই ক্ষুন্ন হয়েছে। আর ব্যানারে যার ছবিকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তিনি অবশ্যই সম্মানী ব্যক্তি এবং নিষিদ্ধ বা অবাঞ্চিত ব্যক্তি নয়।

এব্যাপারে নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য এবং আমরা বিএনপি পরিবার সংগঠনের উপদেষ্টা মোঃ আবুল কাশেম বলেন, দলের একজন কর্মী একজন নেতাকে পছন্দ বা সমর্থন করতেই পারে। সেটা কোন দোষের নয়। আগামি ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিক উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও আমার ছবি ব্যবহার করে শহরে ব্যানার ফেস্টুন দিয়েছিলেন। সেগুলো কেটে ও ভেঙ্গে নষ্ট করা হয়েছে এবং তা অপসারন করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা অত্যান্ত দুঃখজনক এবং ন্যাক্কারজনক ঘটনা। শুধু তাই নয়, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অবমাননা করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, বিষয়টি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ হাইকমান্ডকে জানাবো। তারা এ বিষয়টি দেখবেন।

এদিকে ব্যানার-ফেস্টুন ছেঁড়ার মতো ঘটনাগুলি নাটোরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে এবং পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে উগ্র গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠতে পাওে বলে স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অভিজ্ঞজনরা মনে করছেন। তাই দ্রুত এঘটনায় তদন্ত করে সাংগঠনিকভাবে পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।