সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জে ক্রেতাদের হাঁক ডাকে জমে উঠে ভোর রাতের পাটের হাট। বাংলার হারানো পাটের ঐতিহ্য আবারও ফিরে পেয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে পাটের ভালো দাম পেয়ে এ অঞ্চলের কৃষকরা আবারো পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন হাটে নতুন পাট বেচা কেনা শুরু হয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি সোমবার ভোর রাত (ফজরের আগ) থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতা এসে ভোর রাতের পাটের হাট নামেখ্যাত সলঙ্গা বাজারের মাদ্রাসা মোড়ে শুরু হয় পাট কেনাবেচা। যা সকাল ৬/৭ টার আগেই শেষ হয়ে যায়। রায়গঞ্জ তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষক সোনালী আঁশ পাট বিক্রী করতে আসেন এ হাটে। সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর, বগুড়া জেলার আশপাশের পাট ব্যবসায়ীরা এই হাটে পাট কিনতে আসেন। বর্তমানে বাজারে পাটের দাম ভালো থাকায় উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
বিক্রি উপযোগী সোনালী আঁশ পাট আশেপাশের উপজেলাগুলোতে উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষক ও ক্রেতাদের হাঁক ডাকে জমে উঠেছে ভোর রাতের হাটে পাট বেচাকেনা। প্রতি মণ পাট জাত ও মানভেদে তিন থেকে চার হাজার টাকায় বেচা কেনা হচ্ছে।
গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের চাহিদা ও দাম বেড়েছে। প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়। এতে উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। হাটের ক্রেতা-বিক্রেতা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানাযায়
এসব তথ্য।
উল্লাপাড়া থেকে পাট কিনতে আসা জাহিদুল ইসলাম,স্থানীয় পাট ব্যবসায়ী নাজমুল হকসহ অনেকেই জানান, প্রতিহাটে তারা একেকজন ৩০/৪০ মণ পাট সলঙ্গা হাট থেকে ক্রয় করে থাকেন। চৌবিলা গ্রামের কৃষক বাবু বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম ফলন ভালো হওয়ায় ও বিক্রি করে দাম বেশি পেয়ে খুশি।
হাটের ইজারাদার মতিয়ার রহমান সরকার বলেন, এ হাটে সলঙ্গার বাইরে বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাট ক্রয়-বিক্রয় করতে পাইকাররা আসেন। এবারের পাটের দাম ভালো থাকায় কৃষকরাও বেশ খুশি।
রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম জানান, এ বছর বন্যায় পাটের তেমন ক্ষতি হয়নি। এই উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাটের জাত ও মানভেদে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা মণ বিক্রী হচ্ছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় ১.৫ মেট্রিক টন পাটের উৎপাদন হয়েছে বলে উল্লেখ তিনি আরও বলেন, উপজেলার পাটের হাট হিসেবে সলঙ্গার হাট অনেক আগে থেকেই পরিচিতি পেয়েছে। সপ্তাহে প্রতি সোমবার ভোর রাত থেকে এই হাট বসে এবং বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এখানে পাট কিনতে আসেন।