সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
বেশ কিছুদিন ধরেই তরুণীকে কু-প্রস্তাব ও নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছিলেন আব্দুল আওয়াল খান প্রেম (৩৫) নামের এক যুবক। প্রেমের সেই কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গোসলের সময় তরুণীর ভিডিও ধারণের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত শুক্রবার (৯ আগষ্ট, ২০২৫) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহরের সয়াগোবিন্দ প্রামানিকপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযুক্ত আওয়াল খান প্রেম সয়া গোবিন্দ মহল্লার এলাকার মৃত মলিন খানের ছেলে।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরেই ওই তরুণীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন প্রেম। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তিনি তরুণীর পিছু নিয়ে তাকে কু-প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তরুণীকে হুমকি দিয়ে প্রেম বলেছিলেন, তিনি এমন কিছু করবেন যাতে তরুণী নিজেই তার কাছে যেতে বাধ্য হন।
শুক্রবার বিকেলে নিজ বাড়িতে গোসলখানায় গোসল করছিলেন তরুণী। এ সময় পাশের ঘরে থেকে দেয়ালের উপরে একটি মোবাইল ফোন দেখতে পান ওই ফোন দিয়ে তার গোসলের ভিডিও করার চেষ্টা করছিলেন প্রেম। তখনই চিৎকার দেন তরুণী। এ সময় তার মা ছুটে এলে মোবাইলটি দ্রুত সরিয়ে ফেলে প্রেম।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী তরুণীর ভাই বলেন, আমার বোনের সাথে যা ঘটেছে, তা যেন আর কোনো বোনের সাথে না ঘটে। আমরা থানায় অভিযোগ করেছি। আমরা প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করি। অপরাধী যেন কোনোভাবেই পার না পায়।
এদিকে অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই আওয়াল খান প্রেম পলাতক রয়েছেন। ঘটনার রাত থেকে তার বাড়িতে তাকে পাওয়া যায়নি এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে এ বিষয়ে স্থানীদের মাঝে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে। সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা মো. শামীম শেখ বলেন, ঘটনার দিন মেয়েটির চিৎকার শুনে আমরা সবাই ছুটে আসি। এসে দেখি, পাশের ঘরের জানালা দিয়ে গোসলের ভিডিও করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর সুষ্ঠু ও সর্বোচ্চ বিচার চাই।
মো. রফিক নামে স্থানীয় অপর এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের প্রত্যেকের ঘরেই মা-বোন আছে। যে বা যারা এই ধরনের নোংরা মানসিকতা নিয়ে সমাজে বাস করে, তারা সমাজের কীট। আমরা চাই পুলিশ প্রশাসন যেন কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার না করে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যা দেখে অন্য কোনো অপরাধীর অন্তর কেঁপে ওঠে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান জানান, আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। তদন্ত শেষে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।