নাটোর জেলা প্রতিনিধি:
প্রকৃতির অপরূপ শোভাবর্ধনকারী গাছ মানুষেরও পরম বন্ধু। প্রাণিকুলের বেঁচে থাকার জন্য প্রধান উপাদান অক্সিজেন সরবরাহ হয় গাছ থেকে। গাছের যে প্রাণ আছে,অনুভূতিশক্তি আছে,তা প্রমাণিত। গাছ সব কিছু বিলিয়ে দিয়ে আমাদের জীবন বাঁচিয়ে রাখছে।
অথচ কিছু অসচেতন মানুষ গাছের সঙ্গে নির্মম আচরণ করছে। উপকারের প্রতিদান হিসেবে জীবন্ত গাছে পেরেক ঠুকে রাখছে। ঝুলিয়ে রেখেছে নানা রকম ব্যানার-ফেস্টুন। যারা এই কাজটি করছে তারা হয়তো জানে না,এতে গাছটি মারাও যেতে পারে।
গাছে পেরেক লাগানোয় খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয় তা দিয়ে পানি এবং এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় পচন ধরে। ফলে গাছের খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। একসময় গাছটি মরে যায়।
গাছের এমন কষ্টদায়ক চিত্র ব্যথিত করেছে,
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন(বিবিসিএফ) এর সদস্য সংগঠন সবুজ বাংলার সদস্যদের। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, গাছে পেরেক ঠুকে লাগানো ব্যানার ফেস্টুন অপসারণের।
মঙ্গলবার(৮ জুলাই) সকাল থেকেই,নাটোরের নলডাঙ্গায় তাঁরা নেমে পড়েন গাছের কষ্ট দূর করার কাজে। উপজেলার মাধনগর রেল স্টেশন থেকে শুরু করে চারপাশে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার গাছ থেকে ব্যানার ফেস্টুন অপসারণ করেন তাঁরা।
নিজেরা গাছে উঠে ব্যানার ফেস্টুন নামানোর পাশাপাশি পেরেকগুলো তুলে ফেলেন। এ সময় তাঁরা গাছে পেরেক না লাগানোর জন্য সচেতনতামূলক প্রচারণা চালান।
পরিবেশকর্মীদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে উপজেলার সচেতনমহল। বৃক্ষপ্রেমের এই মহৎ কার্যক্রমে অংশ নেন স্থানীয় অনেকেই।
স্থানীয় এলাকাবাসী,রেজাউল ইসলাম,পিন্টু অধিকারীসহ অনেকে বলেন,মানুষ গাছের সঙ্গে নির্মম আচরণ করছে। উপকারের প্রতিদান হিসেবে জীবন্ত গাছে পেরেক ঠুকে রাখছে। ঝুলিয়ে রেখেছে নানা রকম ব্যানার-ফেস্টুন। যারা এই কাজটি করছে তারা হয়তো জানে না,এতে গাছটি মারাও যেতে পারে। পরিবেশকর্মীদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই আমরা। সেই সাথে সরকারের কাছে দাবি,গাছ বাঁচাতে সারা দেশে,ব্যানার,ফেস্টুন অপসারণ করা হোক।
বিবিসিএফ এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও সবুজ বাংলার সাধারন সম্পাদক ফজলে রাব্বী বলেন,গাছে পেরেক লাগানোয় খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। তাই আমরা মাসব্যাপী লোহা,পেরেক বৃদ্ধ গাছ থেকে ব্যানার,ফেস্টুন,সাইনবোর্ড অপসারণ করতে উদ্যোগ গ্রহন করেছি,মৃত্যুর হাত থেকে গাছগুলোকে রক্ষা করতে চাই। সেই সাথে সরকারের কাছে দাবি,সারা দেশে গাছ রক্ষায় সরকারি ভাবে উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন।