ফজলে রাব্বী, নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিবেদক:
“রানার ছুটেছে তাই ঝুম ঝুম ঘণ্টা বাজছে রাতে/রানার চলেছে, খবরের বোঝা হাতে/রানার চলেছে রানার! কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার রানারের দেখা মেলে না প্রযুক্তির এ যুগে।
হারিয়ে গেছে চিঠি! হারিয়ে গেছে প্রিয়জনকে লেখা কাগজে লেখার সেই যুগ। ডাক বিভাগেরও এখন সেই ব্যস্ততা নেই।
সাইকেলের বেল বাজিয়ে ডাক পিয়নের ‘চিঠি এসেছে…চিঠি…এমন কথাও আর শোনা যায় না। এখন আর সেই আগেকার দিনের মতো পিয়নের পানে চেয়ে থাকতে হয় না প্রিয়জনদের।
চিঠি শূন্য এখন ডাকঘর। প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় এখন আর চিঠির প্রচলন নেই বললেই চলে।
ফটক নড়বড়ে,ছাদের পলেস্তরা খসে পরছে,নষ্ট হচ্ছে প্রয়োজনীয় নথি আর চিঠিপত্র। মনে হবে এগুলো পরিত্যক্ত ভবন। এমনই পুরনো জরাজীর্ণ ভবনে চলছে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ডাক কার্যক্রম। কিংবা ডাকবাক্সের কথা যদি বলা হয়,তারও দুরবস্থা। একসময় এক সময় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ডাকবাক্স দেখা যেত। এখন সেই ডাকবাক্স তেমন আর চোখেও পড়ে না। এই উপজেলায় ডাকঘর রয়েছে ১০টি। সংস্কারের অভারে কিছু ডাকঘর উধাও হয়ে গেছে,অন্যগুলোর অবস্থাও নাজুক।
একসময় মানুষের যোগাযোগ কিংবা মনের ভাব আদান-প্রদানের অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছিল ডাক বিভাগ। এই ডাক বিভাগের মাধ্যমে মানুষ প্রিয়জনের খোঁজখবর নিতো। হলুদ রঙ্গের পোস্টকার্ডে কিংবা সাদা কাগজে চিঠি লিখে হলুদ খামে পাঠানো হতো প্রিয়জনদের কাছে। এখন আর ডাকের মাধ্যমে দাওয়াত কিংবা কোনো খবরের জন্য চিঠির প্রয়োজন হয় না। কারও বাড়ির সামনে এসে ডাকপিয়ন তার সাইকেলের বেল বাজান না।
ভিন্ন ধরনের অনুভূতি আর অনাবিল আনন্দে ভরপুর ছিল হাতের লেখা সেই চিঠিতে। সময়ের পরিবর্তনে এখন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী সেই ডাকবাক্সের ব্যবহার।
আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে অতীতের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ডাক বিভাগ এখন ঝিমিয়ে পড়েছে। হারিয়ে যেতে বসেছে হলুদ খাম আর লাল ডাকবাক্স।
স্থানীয় রাশেদ হোসেন,সাইফাল কিবরিয়াসহ অনেকে বলেন,দীর্ঘদিন ধরে ডাকঘরগুলোর এমন দৈন্য অবস্থা। ডিজিটাল এ যুগে অনেক দপ্তরের অবকাঠামো পরিবর্তন হলেও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগের স্থানীয় কার্যালয়ের চেহারায় পরিবর্তন আসেনি। চিঠির প্রচলন কমে যাওয়ায় অফিসগুলোতে কর্মচাঞ্চল্য অনেকটাই কমেছে। এছারা কক্ষের সাদের ও মেঝের পলেস্তারা উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। দরজা-জানালা অনেক পুরনো।
নলডাঙ্গা উপজেলা পোষ্ট অফিসেরর পোষ্ট মাষ্টার শ্রী দেবব্রত ভট্টাচার্য বলেন,উপজেলার যে সমস্থ ডাকঘর জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। সেসব ডাকঘর সংস্কারের জন্য উদ্ধতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।