নিজস্ব প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেতাকে সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কিছুদিন আগে যাকে ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগ নেতারা ফুল দিয়ে বরণ করেছে ছাত্রদল সভাপতি করার পর তাকেই বিএনপি নেতারাও ফুলের মালায় বরণ করে নিয়েছে।
জানা যায়, সম্প্রতি শাহজাদপুর সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রদলের ৮ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রদল। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির দ্বিতীয় সদস্য মো. সাব্বির হোসেনকে।
এই কমিটির খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে ওঠে। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সাব্বির হোসেনের একাধিক ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদ জানান নেতাকর্মীরা। এদিকে সাব্বির হোসেন কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হওয়ার পর দলীয় কার্যালয়ে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন হীরু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আরিফ। ফেসবুকে এমন একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছাত্রলীগের কমিটি ও ছাত্রদলের কমিটির দুটি প্যাড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের একাধিক নেতা বলেন, সংগঠনে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী থাকতে একজন ছাত্রলীগ নেতাকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।
শাহজাদপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাজাহার হোসেন বলেন, সাব্বির হোসেন আগে ছাত্রলীগ করতো। তাকে আমরা দলে যোগ দিতে দেখি নাই। এখন কিভাবে এই কমিটিতে আসলো সে বিষয়ে আমরা জানি না।
উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক আল মামুন হোসেন জুয়েল বলেন, সাব্বির হোসেন এক সময় ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা করতো। কিন্তু কোন পদে ছিলো না।
শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক আরিফুজ্জামান আরিফ বলেন, কমিটির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। সাব্বির হোসেনের কিছু ছবি ফেসবুকে দেখেছি। সে যে ছাত্রলীগ করেছে তার প্রমাণ আমাদের কাছে প্রামান নেই। তবে বিগত আন্দোলনে সে আমাদের সাথে ছিলো।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন হীরু বলেন, সে অনেক আগে ছাত্রলীগ করতো। ২০২০ সালে ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিল। জুলাই আন্দোলনের আগে সে চেইঞ্জ হয়ে আমাদের দলে এসেছে। আমরা দেখে শুনেই তাকে পদ দিয়েছি।
এ বিষয়ে মো. সাব্বির হোসেন বলেন, তখন আমার এলাকার এক ভাইয়ের সাথে থাকতাম। যখন ছাত্রলীগের কমিটি হয়, তখন আমাকে সে নিয়ে শাহজাদপুরে নিয়ে যায়। সেখানে একটা ছবি উঠছিলাম। কিন্তু প্যাডে যে নাম উঠেছে সেটা আমার নয়। আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে ওঠা ছবি প্রসঙ্গে বলেন, আমার সেই ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারী রাসেলকে সংবর্ধনা দিতে গিয়েছিল, তার সাথে আমি গিয়েছিলাম। সেখানেই ছবিগুলো উঠেছি।