রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
আজ মহান মে দিবস। এটি বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের ঐতিহাসিক দিন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য: ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো এ দেশ নতুন করে’।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে শ্রমিক বিহীন মে দিবস পালন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১ মে) উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে শ্রমিক দিবসে, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতি থাকলেও দেখা যায়নি কোন পেশাজীবি শ্রমিক সংগঠনের শ্রমিকদের। এ নিয়ে খেটে খাওয়া দিনমজুরদের মাঝে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে র্যালীতে অংশগ্রহণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ। যা সরকারি নীতিমালা লংঘনের সামিল।
এ বিষয়ে উপজেলার স্থানীয় একাধিক রিকশা চালক, কুলি, দিনমজুর, ইমারত নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, দিবস আসে, দিবস যায়। কিন্তু আমরা শ্রমিক আমাদের কোন খোঁজ-খবর কেও রাখে না। আজকে শ্রমিক দিবসেও আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। কিন্ত উপজেলা প্রশাসনের এত প্রোগ্রাম, অথচ কেউ আমাদের ডাকে নাই।
শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলেই আজ দৈনিক কাজের সময় আট ঘণ্টায় নির্ধারিত হয়েছে।
শ্রমিক বিহীন মে দিবস পালনের বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শামছুল ইসলাম জানান, মে দিবস শ্রমিকদের নিয়েই পালন হবার কথা, কিন্তু র্যালিতে কোন শ্রমিক আমার নজরে পড়ে নাই।
জামায়াতে ইসলামীর উপজেলার নায়েবে আমির মো. আবুল কালাম বিশ্বাস জানান, প্রেসক্লাবের আহবায়ক হিসাবে আমরা কোন দাওয়াত পাইনি। তবে শ্রমিক দিবসের প্রোগ্রামে আমি রাজননীতিবীদ হিসাবে দাওয়াত পেয়েছি। কিন্তু এই প্রোগ্রামে আমি কোন শ্রমজীবী মানুষের উপস্থিতি লক্ষ করিনি।
উপজেলা ইমারত নির্মাণ শ্রমিকের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে ১০ জন শ্রমিক চাওয়া হয়েছিল। আমরা শ্রমিক পাঠিয়েছি, কিন্তু তারা গিয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সবাইকে দাওয়াত করেছি। মাত্র ১০ জন শ্রমিকের উপস্থিতিতে এ দিবস পালন করা হয়েছে।
সচেতন মহল জানান, আজকের মে দিবসের র্যালীতে আগে পরে কোন শ্রমিকে দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই, ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর রক্তাক্ত ঘটনার স্মরণে ১ মে-কে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ছবি সংযুক্ত।