রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
পর্যাপ্ত পার্কিং ছাড়া হোটেল, প্রতিদিনই মহাসড়কে বাস-ট্রাকের দীর্ঘ সারি ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অংশে রায়গঞ্জ উপজেলার হাটিকুমরুল থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার জুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ৩০ থেকে ৩২টিরও বেশি হোটেল। এসব হোটেলের সামনে প্রতিদিন মহাসড়কের দুই পাশে বাস-ট্রাক দাঁড় করিয়ে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। ফলে তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট, যা সাধারণ যাত্রী, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তির প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘুড়কা ইউনিয়নের ঘুড়কা এলাকায় দেখা যায়, মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যেই গড়ে উঠেছে অন্তত আটটি হোটেল। পশ্চিম পাশে রয়েছে মামা-ভাগ্নে, চাচা-ভাতিজা, ডিসান, সততা, ভুইয়া—আর পূর্ব পাশে পাপিয়া, লালন শাহী হোটেল। এসব হোটেলে খাবার খেতে আসা বাস ও ট্রাক সড়কের উপরেই পার্কিং করে, ফলে মহাসড়কে গাড়ির দীর্ঘ সারি লেগে থাকে প্রতিদিন। যানজটে আটকে থাকেন সাধারণ যাত্রী, শিক্ষার্থী এমনকি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সও।
স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল, ইসমাইল, শুকুর আলী ও মজিবর রহমান বলেন, “হোটেলের সামনে গাড়ি দাঁড় করানোয় আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকি। প্রায়ই রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আটকে পড়ে, ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে।”
ঘুড়কা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিহাব, নয়ন, রুমানা খাতুন ও নাজনীন বলেন, “প্রতিদিন যানজটের কারণে ক্লাসে দেরি হয়। সড়কে দাঁড়ানো গাড়ির ফাঁক গিয়ে স্কুলে যেতে হয়, অনেক সময় ভয় হয় দুর্ঘটনার। “এই রাস্তা হোটেল ব্যবসার জায়গা না হয়ে যেন মানুষ চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয়—এটাই চাই।”
স্থানীয়রা জানান, হোটেল মালিকদের বেশিরভাগই প্রভাবশালী হওয়ায় তারা প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করেই সড়কের ওপর অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না, প্রশাসনের নীরবতাও চোখে পড়ার মতো।
চাচা-ভাতিজা হোটেলের মালিক শরিফুল ইসলাম স্বীকার করেছেন, “হাইওয়ে সড়কের উপরে গাড়ি পার্কিং করা বেআইনি। আমরা চেষ্টা করব গাড়ি যেন রাস্তার ওপর না দাঁড়ায়।” মামা-ভাগ্নে হোটেলের মালিক আব্দুল আলীম বলেন, “আমার হোটেলের সামনে গাড়ি কম থাকে, অন্য হোটেলের গাড়ি রাস্তায় দাঁড়ায়।”
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, “আমরা শীঘ্রই অভিযান চালিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
হাইওয়ে বগুড়া জোনের পুলিশ সুপার শহিদ উল্লাহ জানান, “নিজস্ব জায়গায় হোটেল ব্যবসা করতে হবে। মহাসড়কে গাড়ি পার্কিং সম্পূর্ণ বেআইনি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”