1. thedailydrishyapat@gmail.com : TheDaily Drishyapat : TheDaily Drishyapat
  2. info@pratidinerdrishyapat.com : Pratidiner Drishyapat : Pratidiner Drishyapat
  3. admin@thedailydrishyapat.com : admin :
রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৩ অপরাহ্ন

নির্মাণের মাস না যেতেই ভেঙে গেল সেতু 

সংবাদ প্রকাশক:
  • Update Time : সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৩৩ Time View

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সেতু নির্মাণের মাস না যেতেই ভেঙে গেছে। ফলে ৪টি ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের  হাজার হাজার মানুষ পড়েছে চরম দূর্ভোগে।

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের কৈজুরি-পাচিল বাজার সড়কের জয়পুরা ঈদগাঁহ মাঠ এলাকায় ১৫ মিটার একটি গার্ডার সেতুটির দুপাশের কংক্রিট সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে কৈজুরি, জালালপুর, পোরজনা ও গালা ইউনিয়নের মানুষ।

এদিকে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বাদ জুম্মা এই ব্রীজের ভেঙ্গে যাওয়া সংযোগ সড়ক দ্রুত সংস্কার ও মেরামতের দাবিতে ওই ব্রীজের উপর দাঁড়িয়ে এলাকাবাসি মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধন শুরুর আগে ও পরে এলাকার নারী পুরুষ ও বয়জেষ্ঠ্যরা শাহজাদপুর পিআইও অফিসের দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারি ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্রীজ ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে নানা অনিয়ম-দূর্ণীতি তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছেন।

এ বিষয়ে এলাকাবাসি জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের ১ কোটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটির নির্মাণ কাজ গত ৮ মাস আগে শেষ হয়। এর দীর্ঘদিন পর ২৪-২৫ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা ও কাবিটা) প্রকল্পের ৩য় পর্যায়ের কাবিটা (কাজের বিনিময়ে টাকা) প্রকল্পের আওতায় রাস্তা সংস্কার ও সংযোগ সড়ক সিসিকরণ বাবদ ৬লাখ ৩০হাজার ৯১৬ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। রাস্তা সংস্কারের কাজটি জয়পুরা হাসেনের বাড়ি থেকে জয়পুরা ঈদগাঁহ মাঠ ব্রীজ পর্যন্ত হওয়ার কথা থাকলেও শুধু সংযোগ সড়কটি সিসিকরণ করা হয়েছে। এই সিসিকরণেও আবার নিম্নমানের ও পুরান ইট ও লোকাল বালু ব্যবহার করা হয়েছে। কোনো রড ব্যবহার করা হয়নি। দায়সারা ভাবে গাইড ওয়াল নির্মাণ ও বালু দিয়ে সড়ক ভরাট করা হয়েছে। ফলে এ সংযোগ সড়কটি নির্মাণের ১ মাস না যেতেই সামান্য বৃষ্টিতে সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে গেছে। এতে এ সেতু ও সড়ক দিয়ে এলাকাবাসির চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অপরদিকে সরকারি এ প্রকল্পের ব্যাপক অর্থ লুটপাট করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে জয়পুরা গ্রামের আলে খাতুন, বুলি খাতুন, কালন প্রামানিক ও আবু তাহের বলেন, সেতুটি নির্মাণের সময় সিডিউল অনুযায়ী পাইলিং দেওয়া হয়নি। পানির মধ্যে দায়সারা ভাবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। অপরদিকে গত ১মাস আগে সেতুটির সংযোগ সড়কের সিসিকরণ কাজ শেষ হয়েছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও বর্ষণে তা ভেঙ্গে গেছে। তারা বলেন, সিসিকরণ কাজে কোনো রড ব্যবহার করা হয়নি। নিম্নমানের বালু খোয়া ও পুরাতন ইট ব্যবহার করা হয়েছে। ঢালাই কাজে সঠিক পরিমাণে ইট ,খোয়া ও বালু ব্যবহার করা হয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই ভেঙ্গে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। তারা আরও বলেন, সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এ সড়ক দিয়ে ভ্যান-রিকশা চলাচল করতে না। ফলে এলাকাবাসি ধান, চাল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পরিবহণে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। তারা অবিলম্বে সংযোগ সড়কটি সংস্কারের জোর দাবি জানান।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থী শান্ত, রবিন ও রাসেল বলেন, সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় তাদের স্কুল, কলেজে যাতায়াতে চরম সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময় ভাঙ্গা স্থানে পড়ে গিয়ে স্কুলের পোষাক নষ্ট হয়ে যায়। ফলে তারা আর স্কুল, কলেজে যেতে পারে না।

এ বিষয়ে ভানচালক সোহেল রানা বলেন, এ সড়ক দিয়ে ভ্যান-রিকশা চলাচল করা যায় না। ফলে তাদের আয় উপার্জন আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে।ফলে তাদের সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় জামায়াত নেতা আল আমিন, আমদ আলী, আমিরুল ইসলাম ও আব্দুল কুদ্দস বলেন, সেতুটি নির্মাণের শুরু থেকে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্ণীতি করা হয়েছে। ঠিকাদারকে একাধিকবার সিডিউল অনুযায়ী সঠিক ভাবে কাজ করতে বলা হলেও তিনি তা করেননি। তিনি বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের প্রভাব খাটিয়ে ও শাহজাদপুর উপজেলা পিআইও অফিসের দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের যোগসাজোসে ব্যাপক অনিয়ম দূর্ণীতি করেছেন। আমরা এ বিষয়ে কিছু বললে আমাদের নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। ফলে আমরা এর প্রতিবাদ করেও কোনো সুফল পাইনি। তারা আরও বলেন, পানির মধ্যে পাইলিং করা হয়েছে। ৫০ফুট পাইলিংয়ের স্থালে ২০ফুট পাইলিংও করা হয়নি। সিসি সংযোগ সড়ক নির্মাণেও ব্যাপক অনিয়ম-দূর্ণীতি করা হয়েছে। পুরাতন ইট ও খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। মেইল বালুর ব্যবহারের স্থলে লোকাল বালু ব্যবহার করা হয়েছে। নিম্নমানের বাল, খোয়া ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে গেছে। তারা অবিলম্বে এ সংযোগ সড়কটি সংস্কার ও মেরামতের জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে কৈজুরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন খোকন বলেন, এ বিষয়ে পিআইও এবং কৈজুরি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য শাহজাহান আলী ভাল বলতে পারবে। আমি এ সম্পর্কে কিছু জানি না। তিনি ভিডিও বক্তব্য দিতেও রাজি হননি।

ওই প্রকল্পের সভাপতি ও কৈজুরী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য শাহজাহান আলী বেপারী বলেন, যে বরাদ্দ পেয়েছি সে অনুযায়ী কাজ করেছি। বৃষ্টির কারণে তা ভেঙ্গে গেছে। নতুন করে আবার বরাদ্দ পেলে সংযোগ সড়কটি মেরামত করা হবে। তিনি আরও বলেন, কাজ শেষে সম্পুর্ণ বিল হাতে পেয়েছি। এখন ভেঙ্গে গেলে আমার কিছু করার নেই।

কৈজুরি ইউনিয়নের সচিব মানিক খান বলেন, এ কাজের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। প্রকল্পের সভাপতি ভালো বলতে পারবে। তিনিও ভিডিও বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল কালাম আজাদ বলেন, ব্রীজটি আমার আমলে করা হয়নি। আগের পিআইও করে গেছে। এ সম্পর্কে তিনিই ভালো বলতে পারবে। বৃষ্টির কারণে সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে গেছে। নতুন বরাদ্দ পেলে আবার সংস্কার করা হবে। তিনিও ভিডিও বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্র্বাহী অফিসার মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, সেতুটি সিডিউল অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছে বলে শুনেছি। বৃষ্টির কারণে হয়তো সংযোগ সড়কের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে সড়কটি ভেঙ্গে গেছে। এটি পূণ:রায় সংস্কার করে দেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
প্রতিদিনের দৃশ্যপট ২০২৪
Theme Customized BY Kh Raad (FriliX Group)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com