নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁয় রায়হান আলী নামে এক আইসক্রিম ব্যবসায়ীর বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আগুনে যখন বাড়ির আসবাবপত্র পুড়ছিল, ঠিক সেই মূহুর্তে ফোন করে দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আতংকিত হওয়ার চেয়ে জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে বেশি শঙ্কিত ভূক্তভোগীর পরিবারটি। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ১১ সেপ্টেম্বর ভোর রাত আড়াই টায় শহরের আরজি নওগাঁ এলাকায়। এঘটনার প্রতিকার চেয়ে ভূক্তভোগী ওইদিনই বিকেলে কল আসা সেই মোবাইল নম্বর উল্লেখ করে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। আইসক্রিম ব্যবসায়ী রায়হান আলী লাভেলো কোম্পানির এজেন্ট। রাত দশ টার দিকে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল ওয়াদুদ।
তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। অজ্ঞাত ওই মুঠোফোন নং টি সনাক্ত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর রাতের খাবার খেয়ে পরিবারের লোকজন প্রতিদিনের মতো ঘুমিয়ে যায়। ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ ভোর রাত আড়াই টার সময় আগুনের ধোঁয়া টের পেয়ে জেগে উঠে পরিবারের লোকজন। এরপর দেখতে পায় তাদের বাড়িতে আগুন লেগেছে। তাদের ডাকচিৎকারে এলাকাবাসীর সহায়তায় স্ত্রী পুত্র কন্যাসহ বাড়ীর সকলকে নিয়ে প্রানে বেঁচে যায়। একপর্যায়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাড়ীর ড্রয়িং রুমের আগুন নিভিয়ে ফেলে। এরই মধ্যে ভোর পৌনে চার টার দিকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি অপরিচিত মোবাইল নাম্বার থেকে কল করে। এবং সরাসরি বলে আমি তোর বাড়ীতে আগুন দিয়ে তোকে সর্তক করলাম। আজ সকাল ১০টার মধ্যে তুই আমাকে ১০-দশ লক্ষ টাকা দিবি নইলে আমি তোর যে ছেলে জেলা স্কুলে পড়ে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করব। আর তোকে যেখানে পাব সেখানে খুন করে লাশ গুম করে ফেলব এসব বলে হুমকী প্রদান করে।
ভূক্তভোগীর দাবি, কেউ শত্রুতা করে আতংকিত করতেই তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আগুন জ্বলা অবস্থায় মোট ৪ বার কল দিয়েছে চাঁদাবাজরা। এদিকে গণমাধ্যমকর্মীর হাতে আসা এক কল রেকর্ডে বলতে শোনা যায়, যে কথা বলি সেটা ভালো করে মাথার মধ্যে নিবি, সকাল ১০টার মধ্যে তোকে কল দিব টাকা রেডি করে রাখবি, টাকা না দিলে স্বপরিবারে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফলে বিয়ষটি নিয়ে আতংকিত পরিবার।
অপরদিকে নিরীহ ওই ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবির ঘটনা নিয়ে ওই এলাকায় নানা আলোচনা চলছে। ভয়েস পরিবর্তন ও মোটা ওই কন্ঠে স্বল্প শিক্ষিত কয়েক ব্যক্তির কাজ বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু কারা এতে জড়িত, পুলিশ এখনও কোন কুল কিনারা করতে পারেনি। তবে ব্যবসায়ীর অর্থ সম্পদ কেন্দ্র করে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই গ্রামে থেকেই ব্যবসা করে আসছিল তারা। তাদের কোনো শত্রু আছে বলে আমাদের কারও জানা নেই। পরপর চার বার কল দেওয়ায় কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
ঘটনার তদন্ত কারি অফিসার শহরের কালিতলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ইব্রাহীম বলেন, আসামি সনাক্তকরণে মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিংয়ে দেওয়া হয়েছে, এখনও কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।