আমিরুল ইসলাম:

গত তিন দিনে ও পরিচয় মেলেনি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ওয়ার্ডের ১০ নং বেডে ভর্তি থাকা পঁচিশ বছর বয়সী এই যুবকের। পরিচয় কিংবা ঠিকানা কিছুই বলতে পারেন না এই যুবক। শুধু এতোটুকু বলতে পারেন কেউ একজন তাকে ট্রেন থেকে নেমে যেতে বলেছে।

শুক্রবার (৬ জুন) দিবাগত রাত ১১ টায় উপজেলা পরিষদের গেট সংলগ্ন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্থানীয় দুই যুবক মারুফ এবং আবু হাসান তার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে সে কিছুই বলতে না পারায় তারা যুবককে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। এরপর থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তি রেখে সেখানেই চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকগণ ।

অসুস্থতা জনিত কারণে পাশের বেডে ভর্তি থাকা কারিমুল ইসলাম বলেন, ওনার খাওয়া দাওয়া ওয়াশরুমে যাওয়া চলাফেরা করা সবকিছুই করতে পারে শুধু পরিচয়টা দিতে পারে না।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা শরিফুল ইসলাম সিরাজী বলেন, আমরা আশা করছি ভাইটি যেন তাহার পরিবার খুঁজে পায় তার জন্য তাহার পরিবার হয়তো চিন্তিত আছে তাকে খুঁজে না পেয়ে। আশা করছি খুব দ্রুতই যেন ভাই তার পরিবারের কাছে যেতে পারে।

হাসপাতালে নিয়ে আসা যুবক আবু হাসান বলেন, গত শুক্রবার রাত্রি এগারোটায় মারুফ ভাই আমাকে কল দেয় দিয়ে বলে একটা ছেলেকে অজ্ঞাত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে আমরা তাহাকে মাথায় পানি ঢেলেছি সে ঠিকানা বা পরিচয় কিছুই বলতে পারে না। এরপর আমি এবং মারুফ ভাই দুজন মিলে তাকে কামারখন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসি আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করছি তার পরিচয় পাওয়ার জন্য। ওই সময়ে তিনি কিছুই বলতে পারেনি আজকে শুধু বলেছেন ট্রেন থেকে তাকে কেউ নেমে যেতে বলেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাকিলা খাতুন বলেন, আমাদের চিকিৎসা চলমান আছে । সে এখন স্বাভাবিক জীবনের পথে যাচ্ছে । তাহার দৈনন্দিন কাজ ঠিকই হচ্ছে শুধু সে পুরনো স্মৃতি ঠিকানা অথবা পরিচয় কিছুই বলতে পারে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মেডিকেল অফিসার ডাঃ অভিজিৎ সাহা বলেন, শুক্রবার রাতে যখন ছেলেটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী সেবা কেন্দ্রে নিয়ে আসেন স্থানীয় দুই যুবক তখন তার জ্ঞান স্বাভাবিক ছিল না। আমরা মানবিকতার স্বার্থে ছেলেটিকে ভর্তি করি। তখন থেকেই আমরা চিকিৎসা প্রেরণ করে আসছি এরপরেও এখন পর্যন্ত ছেলেটার স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে ইমপ্রুভমেন্ট পাচ্ছিনা। আমরা তো আমরা হয়তো ভাবছি ছেলেটার পয়জনিং বেসিকে কিছু হতে পারে। সেটা হলেও দুই দিনে ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা। সেই হিসেবেও ছেলেটার নাম ঠিকানা কিছুই বলতে পারছে না। এখন সে তার খাওয়া-দাওয়া হাঁটাচলা সবই করতে পারতেছে কিন্তু কোনরকম নাম অথবা পরিচয় বলতে পারছে না। এ ব্যাপারে স্থানীয় থানাতেও জানানো হয়েছে । আমাদের হাসপাতালের যে প্রধান স্যারকেও জানানো হয়েছে।