সাজ্জাদ হোসেন, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সংঘটিত নৃশংস ‘লগি-বৈঠা তাণ্ডব’-এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফরিদপুরের সালথায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে সালথা উপজেলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সালথা বাজারের জননী সুপার মার্কেটের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

মিছিলে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ শতাধিক মানুষ অংশ নেন। তারা “লগি-বৈঠার খুনিদের বিচার চাই”, “রাজনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধ করো”, “ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করো”— এমন শ্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে তোলেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াতে ইসলামী’র আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবুল ফজল মুরাদ। সঞ্চালনা করেন উপজেলা সেক্রেটারি মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম।এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা উলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা মিকাইল হোসাইন, শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাহাবুর আলম নসরু চৌধুরী, উপজেলা জামায়াত নেতা মো. ওয়ালিউজ্জামান ও মো. লিয়াকত হোসেন মিয়া প্রমুখ।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মাওলানা আবুল ফজল মুরাদ বলেন,“২০০৬ সালের এই দিনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে নিরীহ মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। এ ঘটনা ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। ১৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের বিচার হয়নি—এটাই জাতির জন্য লজ্জার বিষয়।”

তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে সকল অপরাধীর বিচার নিশ্চিত না হলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। সরকার যদি সত্যিই গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হয়, তবে অবিলম্বে লগি-বৈঠার হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে।”

বক্তারা বলেন, ২০০৬ সালের অক্টোবরে রাজধানীর পল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় সংঘটিত সহিংসতায় নিরীহ রাজনৈতিক কর্মীরা প্রাণ হারান। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে লগি-বৈঠা নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে— যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নৃশংস অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

বক্তারা আরও বলেন, ওই ঘটনার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের আজও আইনের আওতায় না আনার ফলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গভীরতর হয়েছে। তারা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও সহিংস রাজনীতির অবসান দাবি করেন।

দোয়া ও নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ।