রায়গঞ্জ ( সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ঘুড়কা ইউনিয়নের দেওভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন পুকুর থেকে সোমবার সকালে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত পরিচয়ের শিশুর মরদেহের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত শিশুটি স্থানীয় তাহসিন (৫)। তাকে উদ্ধারের পর বেশ কিছু সময় ধরে পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও পরে পরিবারের সদস্যরা এসে মরদেহ শনাক্ত করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল প্রায় ৮টার দিকে দেওভোগ বাজারসংলগ্ন পুকুরে জেলেরা মাছ ধরতে নামে। জালের সাথে একটি শিশুর নিথর দেহ উঠে এলে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সলঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা ধারণা করেন, শিশুকে হত্যা করে রাতের কোনো একসময় পুকুরে ফেলে রাখা হয়েছে। তাহসিন গত কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে পরিবার।
নিহত শিশুর নাম তাহসিন হোসেন (৫)। সে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়াগোবিন্দপুর গ্রামের মো. আলম শেখের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির সামনে খেলছিল তাহসিন। এ সময় দুষ্কৃতকারীরা তাকে অপহরণ করে। পরিবারের পক্ষ থেকে খোঁজাখুঁজির পরও কোনো সন্ধান না পেয়ে তার দাদী মোছাঃ নুরমহল বেওয়া সেদিনই সলঙ্গা থানায় জিডি নং–১৭৮৩ দাখিল করেন।
অপহরণের চার দিন পর ১ ডিসেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে, দেওভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের পুকুরে স্থানীয় জেলেরা জাল ফেললে ভাসমান অবস্থায় একটি শিশুর লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে সলঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবির ভিত্তিতে পরিবার লাশটি তাহসিন বলে শনাক্ত করে।
এ ঘটনায় শিশুটির দাদী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনকে আসামি করে সিরাজগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। পরিবারের দাবি—পূর্ব শত্রুতা ও পারিবারিক বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবেই শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।
রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন,“শিশুটির পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে। অপহরণ ও হত্যার রহস্য উদঘাটনে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে।”
সলঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন,“ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং তাৎক্ষণিকভাবে লাশ উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্তের স্বার্থে প্রতিটি দিক আমরা গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহত তাহসিনের সৎ বাবা মুক্তার বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত নই। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat