রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) ভোররাতে ইউনিয়নের তারাপুর এলাকায় দুর্বৃত্তরা এ আগুন লাগিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, তিন একর জমির ওপর অবস্থিত তারাপুর ঈদগাহ ও গোরস্থান ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালে এখানে প্রায় ৪৫ বর্গফুট জায়গা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়, যেখানে বর্তমানে পাঁচজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধি রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী তারাপুর মাদরাসা মসজিদের মোয়াজ্জিন শহিদুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, “ভোর ৫টার দিকে আজান দিতে উঠে দেখি কবরস্থানে আগুন জ্বলছে। এরপর দ্রুত মসজিদের মাইকে গ্রামবাসীকে জানাই। সবাই এসে আগুন নেভাতে সহায়তা করেন।”
ঘটনার খবর পেয়ে পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিফাতুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, পাংশা মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আব্দুল গনি, বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সজিব হোসেনসহ উপজেলা ও ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাগণ।
স্থান পরিদর্শন শেষে মো. রিফাতুল হক বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত স্থানের যে বেড়াটি পুড়ে গেছে, সেটি দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা দ্রুত উদ্ঘাটনে আমরা কাজ করছি।”
নজরুল ইসলাম খান জাহাঙ্গীর বলেন, “যারা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি, তাদেরই প্রজন্ম এই ন্যক্কারজনক কাজ করেছে বলে মনে করি। বিজয়ের মাসে এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। দ্রুত দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।”
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কবরস্থান কমিটির সভাপতি মো. সজিব হোসেন বলেন, “এটি প্রাকৃতিক বা বৈদ্যুতিক কারণে ঘটেনি। এটি স্পষ্টভাবে কেউ আগুন লাগিয়েছে। আমরা কমিটির সদস্যরা বসে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেব।”
স্থানীয়দের দাবি, মুক্তিযোদ্ধাদের মরদেহের প্রতি এমন অবমাননাকর কর্মকাণ্ড পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রেরই অংশ।
ঘটনাটি তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।