নওগাঁ প্রতিনিধি:
পরিবারে স্বচ্ছলতা আনতে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন মিন্টু। এখন সেই মিন্টুই লাশ হয়ে পড়ে আছে বিদেশের মাটি দুবাইতে। আর প্রবাসী মিন্টুর লাশ দুবাই থেকে দেশে আনতে আকুতি জানিয়েছেন তার পরিবার। বলছিলাম নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের এনায়েপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের প্রবাসী মো. মিন্টু হোসেন (৪৩) এর কথা। তিনি দুবাইয়ে মারা যাওয়ার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও অর্থের অভাবে মিন্টুর লাশ দেশের বাড়িতে আনতে পারেনি তার পরিবার। মিন্টুর লাশ দেশে আনতে সরকারি সহযোগীতাসহ সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগীতা চেয়েছেন অসহায় পরিবারটি।মিন্টুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মিন্টু দেশে পেশায় একজন মেকানিক ছিলেন। তার ও তার পরিবারে অভাব-অনাটন যেন তার পিছু ছাড়ছিল না। পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে মা, স্ত্রী ও দু’টি কণ্যা সন্তান রেখে অর্থ উপার্জনের জন্য ঋন করে বাংলাদেশ থেকে একটি কোম্পানির ভিসায় গত ২০২১ সালে পারি জমান দুবাইয়ে। বিদেশ গিয়েও যেন ভাগ্যের চাকা উল্টে যায় তার। কয়েক মাসের মাথায় ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি হয়ে যান অবৈধ প্রবাসী। অনেক চেষ্টার পরেও বৈধ প্রবাসী হতে পারেননি তিনি। এরপর থেকে দীর্ঘ তিন বছর গোপনে দুবাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতেন। এতে করে তার ঋন পরিশোধ তো দুরের কথা নিজের খাওয়া-পড়াও জোটাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন মিন্টু। এরই মধ্যে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্ট্রোক করে দুবাইয়ে একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। মিন্টুর স্ত্রী পারভীন বেগম জানান, স্বামীর মারা গেলেও আমরা পরিবারের লোকজন কেউ ওই সময় তার মৃত্যুর খবর পাইনি। স্বামীর মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাই। এরপর থেকে আমরা পরিবারের লোকজন দুশ্চিন্তায় ছিলাম। হটাৎ করে চলতি মে মাসের ১০ তারিখে প্রবাসী কল্যাণ কার্যালয় থেকে আমার স্বামী মিন্টুর মৃত্যুর খবরটি পাই। তিনি জানান, স্বামীর লাশটি দেশে নিয়ে আসার জন্য অনেক চেষ্টা করছি। কিন্তু স্বামীর লাশটি দেশে আনার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি প্রায় পৌনে তিন লাখ টাকা লাগবে। এতগুলো টাকাতো আমাদের পরিবারের কারো কাছে নেই। তাই স্বামী মিন্টুর লাশটি এখনো দেশে আনতে পারিনি।
তিনি আরও জানান, আমি পরিবার নিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি। একদিকে স্বামীর লাশ নিয়ে আসতে অর্থের প্রায়োজন। অন্যদিকে পরিবারের ঋনের বোঝা এবং দু’টি কণ্যা সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পরেছি। সরকারি সহযোগীতাসহ সমাজের বিত্তমান ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগীতা পেলে স্বামী মিন্টুর লাশটি বাড়িতে আনা সম্ভব। তাই আর্থিক সহযোগীতা চেয়েছেন মিন্টুর পরিবার। (মৃত প্রবাসী মিন্টুর পরিবারের নগদ এ্যাকাউন্ট নম্বর- ০১৭৩৫-১৯১৭৭৩)।উপজেলার কাশিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মখলেছুর রহমান বাবু বলেন, প্রবাসী মিন্টুর মৃত্যুর খবর শুনেছি। তার পরিবারটি খুবই অসহায়। বর্তমানে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে সহযোগীতা করার চেষ্টা করছি। সমাজের বিত্তমান ও হৃদয়বান ব্যক্তিরা সহযোগীতার হাত বাড়ালে পরিবারটি উপকৃত হবেন।রাণীনগরের ইউএনও উম্মে তাবাসসুম বলেন, মিন্টু নামে এক প্রবাসীর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। সহযোগীতার জন্য লিখিতভাবে আবেদন দিতে বলেছি। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে সহযোগীতা করার চেষ্টা করবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat