শাহ আলম সরকার উল্লাপাড়া:
ভরা বর্ষা মৌসুমেও উল্লাপাড়ায় দেশি মাছের আকাল পরেছে। নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর ডোবা ও জলাশয় গুলিতে এখন দেশি প্রজাতির মাছ খুব কমই পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় অর্ধশতাধিক দেশি প্রজাতির মাছ গত ৩০-৪০ বছরের ব্যাবধানে এখন আর দেখা যায়না বললেই চলে। দেশি প্রজাতির মাছের স্থানে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের বিদেশি জাতের মাছ।
অধিক মুনাফা লাভের আশায় উপজেলার মৎস্য চাষিরা বিদেশি জাতের মাছ চাষের দিকে ঝুকেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জলাশয়ে সিলভার কার্প, পাঙ্গাস, রুই, জাপানি, থাইপুটি, বিভিন্ন জাতের তেলাপিয়া, মিনারকার্প, আফ্রিকান মাগুর থাই কৈসহ বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি মাছ চাষ হচ্ছে।
উপজেলার হাট বাজারে বিগত ২০-২৫ বছর আগেও
দেশি জাতের মাগুর, শিং, কৈ, বোয়াল, মৈল, চেলা,পাবদা, চিতল, বাতাসী, খৈলশা, পুটি, আইড়, বাঘাইর, রিঠা, বাউস, টাকি, টেংরা, সরপুটি, গোলশা, ভেদা, বেলেসহ বিভিন্ন জাতের দেশি ও সুস্বাদু মাছ পাওয়া যেত কিন্তু এখন সে মাছগুলি খুব কমই দেখা যায়।
উপজেলার বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের বড় কোয়ালীবেড় গ্রামের বাবুল ও শিপন জানান, আগেকার দিনে প্রতিবছর বর্ষা হতো পানিতে প্রচুর পরিমানে মাছ আসতো অধিকাংশ মানুষই মাছ মেরে খেতো। তখনকার সময় আমরা জাল পেতে নদী থেকে পোনা ধরতাম না ফলে বর্ষার পানিতে মা মাছ পোনা ছাড়িয়ে যেতো বিভিন্ন নদী- নালা, খাল-বিল ও জলাশয়ে আর্শ্বিন কার্তিক মাসে প্রচুর পরিমান মাছ দরা পরতো। এছাড়া আষাঢ় মাসে যখন নতুন বর্ষার পানি আসতো বড় বড় বোয়াল মাছ ধরা পড়তো। তারা আক্ষেপ করে বলেন, সে দিন কোথায় গেল এখন আর নদীতে মাছ পাওয়া যায় না। যদি বিদেশী জাতের মাছ দেশে না আসতো তাহলে আমাদের মাছ খাওয়া দুরহ হয়ে পরতো।
উপজেলার প্রবীন সচেতন ব্যক্তিদের মতে, এক শ্রেণীর মৎস্যজীবি অবাধে পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ শিকার করে দেশি মৎস্য প্রজজনে বাধার সৃষ্টি করছে। তাছাড়া কৃষি জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ও কীট নাশক ব্যবহারের ফলে নদী, নালা, খাল, বিল ও জলাশয়ের পানিতে মিশে পানি বিষাক্ত হচ্ছে ফলে দেশি মাছ মরে যাচ্ছে। তাছাড়া নিষিদ্ধ চায়না জাল পোনা থেকে শুরু করে ছোট বড় কোনো মাছই ছাড়া পায় না চায়না জাল থেকে। অবৈধ এই জালগুলো বন্ধ না হলে আগামী প্রজন্ম দেশীয় প্রজাতির মাছের নাম ভুলে যাবে।
এ ব্যপারে উপজেলা মৎস্য অফিসার মো: আতাউর রহমান
জানান, দেশি জাতের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ইতিমধ্যেই নানা উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় মৎস্য অভায় আশ্রম তৈরি করা হয়েছে। যেগুলোতে রেনু পোনা ছাড়া হয়ে থাকে। বিলগুলিতে পানি হলে এই পোনাগুলি ছড়িয়ে বড় বড় মাছ হয়। তিনি আরো জানান উপজেলায় বাৎসরিক মাছের উৎপাদন হয় ১৭০০০ মে.টন যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ২০০০ হাজার মে.টন বেশি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat