হাদীউল হৃদয়,তাড়াশ:
পর্যাপ্ত পানির অভাবে চলনবিল অঞ্চলে সোনালি আঁশ পাট জাগ দেওয়া যাচ্ছে না। মূলত আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল হলেও শ্রাবণের প্রথম সপ্তাহেও বিল অধ্যুষিত এলাকায় পানির দেখা নেই। খাল-বিল, পুকুরে পাট পচানোর জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা ও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে, পাট জাগ দেওয়ার পানির সংকটে পাট কাটতে পারছেন না অনেক কৃষক।
চলনবিলের সমন্বিত কৃষি তথ্য সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পাটের মৌসুমে চলনবিল অঞ্চলের তাড়াশে ৮১০ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর, শাহজাদপুরে ৩৮৭ হেক্টরসহ নয়টি উপজেলা এলাকায় তোষা, কেনাফ, মেস্তাসহ কয়েকটি জাতের পাটের আবাদ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার ১০৩ হেক্টর জমিতে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সরেজমিনে তাড়াশ উপজেলার পৌর এলাকার রঘুনিলী মহল্লায় বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, পানির অভাবে কিছু জমির কাটা পাট গাছগুলো শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই অবস্থা তাড়াশের হেদার খাল এলাকায়। সেখানেও দেখা যায় মো. আফজাল হোসেন নামের এক কৃষক তার জমির পাট কেটে ফেলে রেখেছেন। তিনিও পানির সংকটে পাট জাগ দিতে পারছেন না। অবশ্য এখানে একটি অপ্রশস্ত খালে কিছু পানি থাকলেও নৌ চলাচলের কারণে পাট জাগ দেওয়া সম্ভব না। কেননা পাট জাগ দিলে নৌ চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। তাই এ কৃষক বিকল্প পাট জাগের জায়গা খুঁজছেন বলে জানান।
আবার অনেকে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকায় ব্যক্তি মালিকানার জলাশয় খণ্ডকালীন সময়ের জন্য ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন এমন তথ্য জানিয়েছেন চলনবিলের কালুপাড়া গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান।
অন্যদিকে নওগাঁ এলাকার পাটচাষি কৃষক মো. আয়নাল প্রমাণিক বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে এ বছর পাটচাষ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছিল, কিন্তু পানির অভাবে এক বিঘা জমির কাটা পাট এখনো জাগ দিতে পারিনি। এ জন্য জমিতেই পাটগাছ শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে।
কৃষক আব্দুল জব্বার হোসেন, কেরাতম আলী, ফিরোজ হোসেনসহ অনেকে জানান, তাদের জমির পাট কাটার উপযোগী হলেও তারা পাট জাগের পানি আর জায়গার সংকটের কথা ভেবে পাট কাটছেন না। অথচ পাট কেটে তারা ওই জমিতে রোপা আমনের আবাদ করবেন, যা পিছিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে চলনবিলে বিভিন্ন এলাকার কোনো কোনো পাটচাষি অপরিষ্কার পানিতে পাট জাগ দিচ্ছেন, যার কারণে পাটের আঁশের রং কালচে হয়ে যাচ্ছে এবং বাজারে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম রাফিউল ইসলাম জানান, চলনবিল একটি বৃহৎ এলাকা। আর আমার উপজেলায় পাট জাগের জলাশয় ও পানির সংকট আছে।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্তা বলেন, আমার এলাকায় সবে পাট কাটা শুরু হয়েছে। আর এ উপজেলার কিছু জায়গায় পাট জাগের পানির সংকট থাকলেও বেশিরভাগ স্থানে পাট জাগের পানি ও জলাশয়ের তেমন সংকট হওয়ার কথা নয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat