নওগাঁ প্রতিনিধি:
আগামী ৬ এপ্রিল নওগাঁর রাণীনগরের পারইল উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনটি পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানে একটি পদে প্রধান শিক্ষকের ছেলে চাকরি প্রত্যাশী, আর বাবা নিয়োগ কমিটির সদস্য। তাই অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক নিয়ম না মেনে নিজে কমিটিতে থেকে নিজের ছেলেকে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন এবং অপর দুইটি পদে ১০/১৫লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
আর এমন অভিযোগ এনে ওই বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠিতব্য নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতসহ সদস্য সচিব পরিবর্তন চেয়ে একই বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান গত বুধবার (৩ মার্চ) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার অনুলিপি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৬এপ্রিল পারইল উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনটি পদে তিনজন প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে একটি পদে প্রধান শিক্ষকের ছেলে মামুনুর রশিদও চাকরি প্রার্থী। ইতিমধ্যেই সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তাই প্রধান শিক্ষকের ছেলে প্রার্থী হওয়ায় নিরপেক্ষ পরীক্ষা হওয়া প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক তার ছেলে মামুনুর রশিদকে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। এছাড়াও সুযোগ বুঝে প্রধান শিক্ষক অপর দুটি পদের জন্য গোপনে প্রার্থীদের কাছ থেকে ১০/১৫লাখ টাকায় তার চুক্তিবদ্ধ হওয়ার বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে এবং মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হতে যাওয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতসহ সদস্য সচিব পরিবতনের দাবি জানানো হয়েছে।
পারইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, এই বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া এই তিনটি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুষ্ঠি হতে যাচ্ছে। যেখানে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তারের ছেলে নিরাপত্তাকর্মী পদে চাকরি প্রার্থী। তিনি সকল কিছু সম্পন্ন করে রেখেছেন। নিরাপত্তাকর্মী পদে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার তার ছেলে মামুনুর রশিদকে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন যা সম্পন্ন নিয়ম বর্হিভূত। নিয়মানুসারে প্রধান শিক্ষক ওই নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব, তাই তিনি ওই নিয়োগ কমিটিতে থেকে তার ছেলেকে নিয়োগ দেওয়ার শতভাগ চেষ্টা করবেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারি নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিয়ম ভেঙ্গে তার ছেলেকে নিয়োগ দিবেন এটি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া শতভাগ স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে হওয়া উচিত। এমন কর্মকান্ড বিদ্যালয়ের জন্য যেমন সুখকর নয়, তেমনি ভাবে বিদ্যালয় নিয়ে এলাকাবাসীদের মাঝেও নেতিবাচক মনোভাবের জন্ম দিবে। তাই প্রধান শিক্ষকের আয়োজিত এই প্রহসনের নিয়োগ স্থগিত করতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করতেই আবেদনকারী অন্যান্য প্রার্থী ও এলাকাবাসীদের অনুরোধ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি শতভাগ আশাবাদি সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রæতই একটি সুষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তারের মোবাইল ফোনে (০১৭৫৯৪৪৯৫৬৭) একাধিকবার ফোন দিলে তা রিসিভ না হওয়ায় বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান, কোনো শিক্ষক নিয়োগ কমিটিতে থেকে নিজের সন্তান কিংবা আত্মীয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন না। যে পদে সন্তান কিংবা আত্মীয় পরীক্ষা দিবে সেই পদের পরীক্ষা এবং ভাইভা বোর্ড থেকে অবশ্যই ওই শিক্ষককে বিরত থাকতে হবে। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat