শাহ আলম সরকার উল্লাপাড়া:
নিজের বাড়িতে ছোট্ট পরিসরে শুরু করেন নার্সারি। লাভজনক হওয়ায় পরিসর আরও বড় করেন। গাছের চারার গুণগত মান ভালো হওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে অনেকে তার নার্সারিতে আসছেন চারা সংগ্রহ করতে। এই নার্সারী 'বনফুল নার্সারী' নামে পরিচিত। বর্তমানে প্রায় ৭ বিঘা জমির উপর এই নার্সারী প্রতিষ্ঠিত।
এই নার্সারিতে আম বারি-৪, সূর্যডিম, কাটিমন, সুবর্ণরেখা,আম্রপালিসহ প্রায় ৫০ জাতের দেশি-বিদেশি আমের চারা রয়েছে। এ ছাড়া চায়না-৩ লিচু, বেদানা লিচু, মুম্বাই লিচু, জাম, ভিয়েতনামি কাঁঠাল, পেয়ারা, রাম্বুটান, সাতকরা, থাই পেয়ারা, লটকন, আমলকি, কদবেল, পেঁপে, সফেদা, ভিয়েতনামি নারিকেল, জামরুল, থাই মিষ্টি তেঁতুল, বেদেনা, ডালিম, আপেল, সাদা আপেল, কমলা, নাশপাতি, বেল, চালতা, আমড়া, ড্রাগন ফল, আক্সগুর, মিষ্টি জলপাই, করমচা, বুবি, চায়না কমলা, কাশ্মীরি কুল, বাউকুলসহ প্রায় শতাধিক দেশি–বিদেশি ফলের চারা রয়েছে।
অপর দিকে শোভাবর্ধনকারী গোলাপ, মুসেন্দা, রঙ্গন, বেলি, চার ধরনের জবা, জুঁই, গন্ধরাজ, হাসনাহেনা, বাগানবিলাস, সাদা জিনিয়া, কসমস, সূর্যমুখী, পাতাবাহার, কৃষ্ণচূড়া, মাধবীলতা, ক্রিসমাস ট্রি, ফিজিয়াম, ডালিয়া, নয়নতারাসহ দেশি–বিদেশি ফুলের চারা পাওয়া যায়।
ঔষধি গাছের মধ্যে ঘৃতকুমারী, তুরুক চান্ডাল, বাই চান্ডাল, পাথরকুচি, নিম, অর্জুন, শতমূলসহ বিভিন্ন মসলাজাতীয় গাছ ও চারা রয়েছে।
এ ছাড়া বারোমাসী শজনে, এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা, গোলমরিচ, লোভেরা, শতমূলী, তুলসীসহ বিভিন্ন মসলা, ঔষধি গাছ, কাঠের গাছ, সবজির চারা পাওয়া যায়।
উল্লাপাড়া পৌরশহরের ৪নং ওয়ার্ড উল্লাপাড়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের মৃত আলী আহমেদের দ্বিতীয় ছেলে জয়নুল আবেদীন। জয়নুল আবেদীন করেছেন গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট। কখনো চাকুরির পিছে ছোটেননি। তিনি জানান, চাকুরি নয় ব্যবসা, ব্যবসা করার জন্য বেঁছে নেন নার্সারী আর তাই বাড়ির আঙ্গিনায় ছোট পরিসরে গড়ে তোলেন নার্সারি। সেই থেকে শুরু হয় তার নার্সারি ব্যবসা। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নানা প্রজাতির ফলদ, বনজ, ঔষধি, ফুলসহ সৌন্দর্যবধনমূলক গাছের চারা উৎপাদন শুরু করেন। দিন দিন পরিচিতি বাড়ে তার নার্সারি ব্যবসার। নার্সারিতে চারার গুণগত মান উন্নত ও দাম নাগালের মধ্যে হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা আসছেন কিনতে। আজকাল আমার বাগানের চারা দেশের বাহিরে বিক্রি হচ্ছে।
নার্সারিতে চারা কিনতে হাফিজুর রহমান জানান, তিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বিনা মূল্যে কিছু চারা বিতরণের জন্য ঔষধি ও ভেষজ গাছ নেওয়ার পরিকল্পনা আছে তার। গাছগুলো দেখার পর মনে হলো নার্সারির পরিবেশ অনেক সুন্দর, গাছগুলো অনেক যত্নসহকারে উৎপাদন করা হচ্ছে। এখান থেকে চারা নিলে আমি আশানুরূপ ফল পাব বলে আশা করি।
নার্সারির মালিক জয়নুল আবেদীন জানান, ছোট্ট থেকে শুরু করে এখন বড় পরিসরে রূপ নিয়েছে তার নার্সারি। এ নার্সারি থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়েই আমার সংসার চলে। শুধু তাই নয় আমার এই নার্সারী বাগানে ৮ থেকে ১০ জন লোক কাজ করে যাদের বেতন মাসিক ১৫,০০০ হাজার টাকা। চারার গুণগত মান উন্নত আর দাম সুলভ হওয়ায় প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে এসে মানুষ আমার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক সময় নার্সারির ক্ষতি হয়, তাই সরকার যদি সুদমুক্ত ঋণ বা আর্থিক সহায়তা প্রদান করে, তবে আরও বেশি লাভবান হতে পারবেন বলে জানান তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat