নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর নিয়ামতপুরে সেতারা বেগম নামের এক নারী তার সন্তানের স্বীকৃতি চাওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হুজ্জাতুল্লাহ ওরফে বকুল ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। ভূক্তভোগীর অভিযোগ স্বামী বকুলসহ তার লোকজনের হুমকির কারণে সেসহ তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পাড়ইল ইউনিয়নের গন্ধশাইল গ্রামে। তাই তিনি প্রশাসনের নিকট নিরাপত্তাসহ আসামীদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবী জানিয়েছেন। প্রতিকার পেতে গত সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর নওগাঁ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী সেতারা বেগম।
বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে জানতে চাইলে নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দীন মুঠোফোনে কালবেলাকে বলেন, এটা একটা পারিবারিক বিষয়। তারপরও অভিযোগ হাতে পেলে বিষয়টি তদন্ত স্বপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নিয়ামতপুরের গন্ধশাইল গ্রামের ইসাহাক ইসলামের ছেলে হুজ্জাতুল্লাহ ওরফে বকুল এর সাথে একই গ্রামের সিরাজ উদ্দীনের মেয়ে সেতারা বেগমের বিয়ে হয়। এরপর বকুল বিদেশে চলে যায়। দীর্ঘ চার বছর পর দেশে এসে সেতারা বেগমের সাথে ঘর-সংসার করার সুবাদে পেটে সন্তান আসে। তখন বকুলের সাথে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় সন্তান নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করে। এতে সেতারা রাজি না হলে বকুলের বন্ধুদের দিয়ে তার উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। এমতাবস্থায় বকুল তাকে অন্তঃসত্ত্বাবস্থায় রেখে পুনরায় বিদেশে যান। তিনি বিদেশে থাকাকালীন কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সন্তান জন্মের পর থেকে বকুলের পরিবার ও তার বাহীনি দিয়ে সেতারা বেগমকে বিভিন্নভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ, থানা ও গ্রামে বিচার দিয়েছেন অনেকবার। কিন্তু কেউ তার দাপটের কারণে সুষ্ঠবিচার করতে পারেনি। এরপর বকুল দেশে আসলে তিনি আবারো অত্যাচার শুরু করে। নিরুপায় হয়ে সেতারা ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু বকুলের টাকার জোরে সেই অভিযোগটি প্রত্যাখান করায় নিরুপায় হয়ে সেতারা বেগম নওগাঁ আদালতে মামলা দায়ের করে। সেই মামলাটি দীর্ঘদিন চলাবস্থায় বকুল সবকিছু মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়ে তার সাথে মেলামেশা করে। এরপর আবারো তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তাকে ছেড়ে আবারো বিদেশে চলে যায়। দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার পর আবারো দেশে এসে সন্তানের ভরন-পোষণ ও লোক সমাজে স্বীকৃতি দেবে বলে আবারো ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের উদ্দেশ্য ছিল তাকে ও তার মেয়েকে হত্যা করা। এসব বিষয় নিয়ে তাকে অনেকবার মারধর করে এবং আদালতে সেই মামলা চলমান রয়েছে। এরপর মামলার আসামী হুজ্জাতুল্লাহ ওরফে বকুল ও তার বাহীনি মনসুর আলীর ছেলে জুয়েল, কালুর ছেলে শাফী, বিশুর ছেলে ফরিদসহ তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে দরজা ও টিনের চালা ভাংচুরসহ তাকে বেদম মারপিট করে। এমনকি তার মেয়েকে মেরে ফেলারও চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে সেতারা বেগম বলেন, আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এমনকি বকুলের বাহিনী তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। তাদের ভয়ে বাসায় থাকতে ও রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছি না। বাসার বাহিরে গেলেও সব সময় বকুলসহ তার বাহীনি ওঁত পেতে থাকছে। তাই তিনি প্রশাসনের নিকট নিরাপত্তাসহ আসামীদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবী জানান। আর সেই সাথে মেয়েকে স্বীকৃতি প্রদানের দাবী করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হুজ্জাতুল্লাহ ওরফে বকুল গণমাধ্যমকর্মীকে জানান, সেতারাকে বিযে করেছি একথা সত্য। তবে তার সাথে বনিবনা না হওয়ায় তাকে তালাক দিয়েছি। মেয়ে ও মেয়ের মা উল্টো আমাকেই হয়রানি করছে। এমনকি এ বিষয় নিয়ে মানববন্ধনও করেছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat