সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবীতে আবারও আন্দোলনে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। একই সাথে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শিক্ষক-কর্মচারিরাও।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেল ৫টায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-৩ এর শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রকল্প অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার হুঁশিয়ারী দেন শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে সন্ধ্যায় অস্থায়ী অ্যাকাডেমিক ভবন-৩ এর অডিটোরিয়ামে আয়োজিত পৃথক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক-কর্মচারিরা দু’দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ইমরান বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নয় বছর পার হলেও স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে একটি টাকাও বরাদ্দ দেয়নি সরকার। পরপর সাতবার ডিপিপি সংশোধন করে ৫১৯.১৫ কোটি টাকার ডিপিপি উপস্থাপন করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ৭ মে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর সভায় আলোচিতও হয়। ওই সভায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ঐক্যমত্যে পৌঁছালেও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সরেজমিনে ক্যাম্পাস দেখতে চান। গত ১৬ জুন তিনি শাহজাদপুরের বুড়ি পোতাজিয়ায় ক্যাম্পাসের নির্ধারিত স্থান দেখে প্রতিবেদন জমা দিলেন। তিনি কি প্রতিবেদন লিখলেন, আমরা জানি না।
তিনি বলেন, সবকিছু হয়ে যাওয়ার পরেও শুধুমাত্র একটা এসকিউজের জন্য একটা উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান ভ্রমণে আসলেন। পরিদর্শনে এসে তিনি আশ্বাসও দিয়ে গেলেন। কিন্তু উনি যাওয়ার পর একনেকের কোন সভাতে এই প্রজেক্টের নামও ওঠে নাই।
প্রকল্পটি কেন অনুমোদিত হচ্ছে না এ নিয়ে সরকার এখন পর্যন্ত কোন ব্যাখ্যাও সরকার দেয়নি। এটি কেবল রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি উপেক্ষা নয়, এটি বাংলাদেশের বিপ্লবী ছাত্রসমাজের স্বার্থের প্রতি অবজ্ঞা।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ আজ চূড়ান্তরূপে হতাশ। ক্যাম্পাস না থাকায় শ্রেণিকক্ষের সংকট, আবাসন সংকট, নিরাপত্তাহীনতাসহ নানা অসুবিধায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা হয়ে উঠছে না। এভাবে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। আমরা ২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে কালো ব্যজ ধারণ ও ২৭ জুলাই মহাসড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া আম্মার ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান, বাংলা বিভাগের মেরাজ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী নওশীন বক্তব্য রাখেন।
অপরদিকে শিক্ষক-কর্মচারিরা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রক্টর নজরুল ইসলাম ও আইন কর্মকর্তা আরমান শোভন। এ সময় স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রকল্পের দাবীতে ২৬ ও ২৭ জুলাই মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবীতে আন্দোলনে যায় শিক্ষার্থীরা। ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ১২ দিন মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধ, লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে তারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে। ২৪ ফেব্রুয়ারি মূল ব্যয়ের ৯৩ দশমিক ৫০ শতাংশ কমিয়ে ৯ হাজার ২শ কোটি টাকার প্রকল্প ৫১৯ কোটি টাকায় নামিয়ে এনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় তোলা হয়। কিন্তু ৬ মাসেও প্রকল্পটি একনেক সভায় এজেন্ডাভুক্ত হয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন
✆ ০৯৬৩৮-৯০৭৬৩৬। ই মেইল: thedailydrishyapat@gmail.com
।
Copyright 2025 Pratidinerdrishyapat